বিএম কনটেইনার ডিপোর দক্ষিণ–পূর্ব কোণের দেয়াল ঘেঁষে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। দুই বছর ধরে দোকানটি চালান মো. হানিফ (৫০)। ডিপোর শ্রমিক-কর্মচারীরাই তাঁর ক্রেতা। শনিবার রাতে ডিপোতে বিস্ফোরণের পর প্রাণ বাঁচাতে সবাই যখন ঘরমুখী, তখন আহত শ্রমিকদের উদ্ধারে বুক চিতিয়ে দাঁড়ান ক্ষুদ্র চা–দোকানি হানিফ। বাঁচার আকুতি নিয়ে নিরাপত্তা দেয়াল টপকাতে চাওয়া ৩০ শ্রমিককে একাই দেয়াল পার করেছেন তিনি।
মো. হানিফ চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর এলাকার মৃত নুরুল আহাদের ছেলে। ছোটবেলা থেকেই তিনি সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের লালবেগ এলাকায় বসবাস করেন। আট সন্তানের বাবা হানিফ দুই বছর আগে বিএম ডিপোর পাশে এই চা–দোকান দেন। দোকানের আয় দিয়েই চলে সংসার।
আজ সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর পাশের চা–দোকানটিতে বসে মো. হানিফের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রতিদিনের মতো শনিবার রাতেও তিনি দোকানে বেচাবিক্রি করছিলেন। হঠাৎ বিস্ফোরণের পর হতবিহ্বল মানুষ চারদিকে ছোটাছুটি শুরু করেন। বিস্ফোরণে আহত শ্রমিকেরা তাঁর দোকান এলাকায় ইট-সিমেন্ট ও কাঁটাতার দেওয়া উঁচু নিরাপত্তা দেয়াল টপকে পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পোড়া শরীর, ভাঙা হাত–পা আর রক্ত ঝরা শরীরে দেয়াল পার হতে পারছিলেন না তাঁরা।
হানিফ বলেন, অবস্থা বেগতিক দেখে বাড়ি যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে দোকানের চালায় উঠে আহত শ্রমিকদের উদ্ধারে লেগে যান তিনি। নিজের ছোট্ট শরীর নিয়ে আহত শ্রমিকদের দেয়াল পার করে আনাটা কষ্টসাধ্য হলেও থামেননি হানিফ। একে একে পাঁচ শ্রমিককে পার করে আনেন। এরপর স্ত্রী নাছিমা বেগম তাঁর খোঁজ করতে দোকানে আসেন। তখন স্ত্রীকে দিয়ে বাড়ি থেকে একটি কাঠের মই আনান। মই পাওয়ার পর ৪০ মিনিটে আরও ২৫ জন শ্রমিককে উদ্ধার করে প্রাণে বাঁচান তিনি। পরে আহত শ্রমিকদের বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্সে।
এ বিষয়ে মো. হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ডিপোতে কাজ করা বেশির ভাগ শ্রমিকই তাঁর পরিচিত। বিস্ফোরণের পর আহত অবস্থায় দোকান এলাকায় এসে তাঁদের বাঁচার আকুতি তিনি উপেক্ষা করতে পারেননি। তাই ভয়াবহ সেই পরিস্থিতে শুধু নিজে বাঁচার কথা না ভেবে তাঁদের উদ্ধারে এগিয়ে যান।
দীর্ঘ সাত বছর পর অবশেষে পর্দায় ফিরছেন দেশের আলোচিত তারকা দম্পতি অনন্ত জলিল ও বর্ষা। ‘দিন : দ্য ডে’ সিনেমার মাধ্যমে তারা প্রেক্ষাগৃহে আসছেন। আগামী কুরবানি ঈদে সিনেমাটি মুক্তি পাবে। যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অনন্ত নিজেই। রোববার সিনেমাটির সেন্সর সনদও হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ও ইরানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এ সিনেমাটির টিজার ও ট্রেলার এরই মধ্যে দেখেছেন দর্শক। এবার ছবিটির মুক্তির তারিখ নিশ্চিত করলেন অনন্ত জলিল। তিনি বলেন, ‘আমরা সেন্সর সনদ পেয়েছি। সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। দিয়েছেন আনকাট সনদ। দীর্ঘদিন ধরে দর্শকরা এ সিনেমার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। এবার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। কুরবানি ঈদেই সিনেমাটি মুক্তি পাবে।’ এর আগে চলতি বছরের শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে অনন্ত জানিয়েছিলেন, এ সিনেমার বাজেট প্রায় শতকোটি টাকা। বিশ্বের কয়েকটি দেশে এর শুটিং করা হয়েছে। যারা বাংলাদেশ থেকে প্রবাসে যান তারা বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হন। বাংলাদেশ, তুরস্ক, আফগানিস্তান, ইরান— এই চার দেশ মিলিয়ে ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমায় উঠে আসবে সেসব লোহমর্ষক প্রেক্ষাপট। এতে অনন্ত ছাড়াও আছেন তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা বর্ষা। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ইরানি নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজম। সিনেমাটি প্রসঙ্গে অনন্ত আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ছোট বাজেটের যেসব সিনেমা তৈরি হয়, আমার এ সিনেমার বাজেট দিয়ে সে রকম একশটি সিনেমা নির্মাণ করা যাবে। তবে ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমার বেশিরভাগ অংশের অর্থের জোগান দিয়েছে ইরানি প্রযোজক। কারণ এত বেশি বাজেটের ছবি নির্মাণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’ ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমায় অনন্ত জলিলকে আন্তর্জাতিক সংস্থার একজন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে দেখা যাবে। বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের দমন করতে অভিযানে অংশ নেবেন তিনি। প্রসঙ্গত, অনন্ত জলিলের সর্বশেষ সিনেমা ‘মোস্ট ওয়েলকাম-২’ নামে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল ২০১৪ সালের ২৯ জুলাই। সিনেমাটি সেই সময় ব্যবসা সফল হয়েছিল।
ওয়াকিল আহমেদ
আমি তখন পুরান ঢাকার মহানগরী ৭৭’র থিয়েটার কর্মী। চোখে স্বপ্নÑ একদিন নাটকের বড় অভিনেতা হব। গিরীশ ঘোষ, শম্ভু মিত্র, উৎপল দত্তকে ছাড়িয়ে যাবো এবং একদিন সিনেমা করব। গন্তব্যÑ একজন আধুনিক অভিনেতার শেষ ঠিকানা। সেই সময়ের আরেক থিয়েটার কর্মীÑরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শাস্তি’ নাটকের ছিদেম রুই’র চরিত্রের দারুণ অভিনেতা অমল সুর ছিল আমার খুব নিকট বন্ধু।এ কই নাটকে চন্দরা দাসির চরিত্রে অভিনয় করতেন সেই সময়ের আরেক তুখোড় অভিনয় শিল্পী ডালিয়া রহমান। ‘শা¯ি’Í নাটকটি বাংলাদেশ টেলিভিশনেও প্রচারিত হয়েছিল, বেশ দর্শকপ্রিয় হয়েছিল। ডালিয়া রহমান অভিনীত বিটিভি‘র ‘বাঁচা’ নাটকটিও দর্শকহৃদয়ে খুব দাগ কেটেছিল। ‘শাস্তি’ নাটকটির নির্দেশনা করতেন বাবুল চৌধুরী। নাটকটি সেই সময় থিয়েটার অঙ্গনে বেশ জনপ্রিয় এবং সমাদৃত হয়েছিল।প্রয়াত চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্রদ্ধেয় চাষী নজরুল ইসলাম মহিলা সমিতিতে ‘শাস্তি’ নাটকের মঞ্চায়ন দেখার পরেই ‘কাঠগড়া’ নামে নায়িকা রোজিনা ও নবাগত আবিদকে নিয়ে আলমগীর পিকচার্সের প্রযোজনায় সাদাকালোয় একটি সিনেমা শুরু করেছিলেন। আবিদও মহানগরী ৭৭’র শাস্তি নাটকের দুঃখিরাম রুই’র চরিত্রের নিয়মিত অভিনয় শিল্পী ছিলেন। তার আসল নাম আবুল হোসেন। সিনেমায় মানুষ তাকে আবুল চেয়ারম্যান নামেও জানেন।‘কাঠগড়া’ সিনেমাটির অনেকদিন শুটিং হওয়ার পরও অন্যতম একজন শিল্পীর প্রায় প্রতিদিনই শুটিংস্পটে দেরি করে উপস্থিত হওয়ার কারণে আলমগীর পিকচার্সের কর্ণধার মুভি-মোগল-খ্যাত জাহাঙ্গীর খান ক্ষুব্ধ হয়ে সিনেমাটির কাজ বন্ধ করে দেন। সে কারনেই সিনেমাটি আর মুক্তির মুখ দেখেনি। এই ঘটনার প্রায় একযুগ পর চাষী ভাই ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যানারে রিয়াজ ও পূর্ণিমাকে নিয়ে ‘কাঠগড়া’ নাম বাদ দিয়ে ‘শাস্তি’ নামে সিনেমাটি রঙে নির্মাণ করেন। ছবিটি বেশ আলোচিত এবং সর্বমহলে সমাদৃত হয়।আমি থাকতাম তাঁতি বাজারের প্রসন্ন পোদ্দার লেনে, আর অমল থাকত শাঁখারী বাজারে। পাশাপাশি মহল্লায় থাকার কারণে আর পরিচয়ের পর থেকে একসাথে সবসময় চলার কারণে আমরা খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলাম। নাটক করা, নাটক দেখা, নাটকের মহড়া দেয়া ছাড়াও আমি আর অমল একবার নিউ বঙ্গ দীপালি অপেরা নামে এক যাত্রাদলে শ্রী রতেœশ্বর বাবুর পরিচালনায় বেশ কিছুদিন বিভিন্ন যাত্রাপালায় প্রতি রাত্রি ৩০০ টাকা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নিয়মিত অভিনয় করেছি। তখন আরো একটা কাজ আমরা করতামÑআর তা হলো আমরা দুজন মিলে নাটকের প্রম্পটার হিসেবে দলের বাইরে বাণিজ্যিক নাটকগুলোতে নিয়মিত ভাড়ায় যেতাম। এতে করে পকেটে কিছু টাকর আসত এবং হাত খরচাটা ভালোই চলে যেত।সেই সময়ে আমাদের দলের মেকাপ আর্টিস্ট ছিলেন প্রয়াত দীপক কুমার সুর। তিনি তখন সিনেমাতেও বেশ জনপ্রিয় মেকাপ আর্টিস্ট ছিলেন। নায়করাজ রাজ্জাক ভাই দীপকদাকে খুব পছন্দ করতেন। রাজ্জাক ভাইর প্রায় ছবির মেকাপ আর্টিস্ট ছিলেন দীপকদা। দীপকদা তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পুরস্কারও লাভ করেন। সিনেমায় কাজ করার জন্য এবং শুটিং দেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমি দীপকদাকে সময়ে-অসময়ে জ্বালাতন করতাম। এবং একসময় তার হাত ধরেই আমার সিনেমায় যাত্রা শুরু হয়।তো একদিন দীপকদার আমন্ত্রণে অভিনেতা অমল সুর আর আমি দুজন মিলে শুটিং দেখতে গেলাম টিকাটুলি¯‘ হুমায়ুন সাহেবের বাড়ি বেঙ্গল স্টুডিওতে। শুটিং দেখার প্রত্যক্ষ সুযোগ পেয়ে আমরা খুব খুশি। সেখানে গিয়ে দেখিÑআজিজভাই ‘সমাধান’ সিনেমার শুটিং করছেন-শুটিংয়ের মানুষ এবং আনুষঙ্গিক সবকিছু দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমি যেন ঝলমলে রূপালী আলোয় আলোকিত এক রূপকথার রাজ্যে ঢুকে পড়লাম...। সেকি আনন্দ, খুশিতে আত্মহারা হয়ে গলাম! সিনেমার সেই রূপকথার রাজ্যের রাজা ছিলেন চলচ্চিত্রকার শ্রদ্ধেয় আজিজুর রহমান, আমাদের প্রিয় আজিজভাই।দীপকদা আমার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে আজিজভাইর সামনে নিয়ে গেলে আমি অবাক বিস্ময়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম তাঁকেÑযিনি সিনেমায় আমার দেখা প্রথম স্বপ্নপুরুষ! কিন্তু কে জানত তখন, কালক্রমে আমিও একদিন সিনেমার মানুষ হয়ে উঠব, এবং উঠলামও। দীপকদার মাধ্যমে হাফিজউদ্দিন ভাইর সঙ্গে ‘ঘরনী’ সিনেমার সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করলাম।শুরু হলো আমার কল্পিত সিনেমার রাজা আজিজুর রহমানের শুটিং স্পটে দেখা সিনেমার রাজ্যে বিচরণ, স্বপ্নের সিনেমায় আমার দীর্ঘ পথচলা। মাঝে মধ্যে আজিজ ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলেই শ্রদ্ধা-সালাম জানাতাম। হতো একটু-আধটু কুশল বিনিময়। আজিজ ভাই সিনেমা নির্মাণে কতোটা সফল কিংবা তিনি কত বড় মাপের চিত্র নির্মাতা সেই বিচার-বিশ্লেষণ করবেন চলচ্চিত্র বোদ্ধারা, বিজ্ঞজনেরা। তবে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর নির্মাণ কৌশল আমার খুব ভালো লাগত, তাঁর গল্প বলার ঢং ছিল একদম সাদামাটা, সহজ-সরল। সাধারণ দর্শক সহজেই তাঁর সিনেমার অভিনয়ে-গানে হাসি-কান্নায় নিজেদের আবেগ অনুভূতিতে আপ্লুত হয়ে পড়তেন। ‘ছুটির ঘন্টা’ সিনেমার শো শেষে কাঁদতে কাঁদতে চাখের পানি মুছতে মুছতে হল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেছি অনেককে। মনে হতো ‘একদিন ছুটি হবে’র গভীর ভাবনায় বুঁদ হয়ে থাকত তারা।আবার কখনো দেখেছি একজন রিক্সাওয়ালা ‘অশিক্ষিত’ সিনেমার গান গাইতে গাইতে শহরময় ঘুরে বেড়াচ্ছেনÑ ‘ঢাকা শহর আইসা আমার পরাণ জুড়াইছে।’ সিনেমায় গানের উপযুক্ত ব্যবহার এবং গানের গুরুত্ব যে কতটা গভীর তা আজিজ ভাইয়ের সিনেমাগুলো দেখে শিখেছি। একটা ভালো গান যে একটা সিনেমাকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তা তাঁর কাছেই জানা। যেমন, ‘সমাধান’ সিনেমার একটা গান আমি আজো ভুলিনি-
‘তোমাদের সভায় আমার এ গান হয়তো বেমানান হবে-
নামহারা ফুল প্রাসাদ কাননে ঠাঁই পেয়েছে বলো কবে।’
পরিচালক আজিজ ভাই, সঙ্গীত পরিচালক সত্য সাহা আর গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার এই ত্রি-রতেœর অসংখ্য জনপ্রিয় গান আমাদের বাংলা সিনেমাকে যথেষ্ট ঋদ্ধ করেছে।
১৯৫৮ সালে স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক এহতেশামের ‘এদেশ তোমার আমার’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে সিনেমায় কাজ শুরু করেন আজিজ ভাই। পরে এহতেশাম ভাইয়ের অনুজ চলচ্চিত্র পরিচালক মুস্তাফিজ ভাইর সঙ্গেও তিনি সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন এবং এই ভ্রাতৃদ্বয়ের সঙ্গে তাঁদের জীবনের শেষ ছবি অবদি নিজের সিনেমা নিয়ে প্রচন্ডতম ব্যস্ত থাকা সত্তে¡ও তাঁদের ছবি নির্মাণে সহযোগিতা করেছেন।
ময়মনসিংহের লোকগাঁথা নিয়ে আশরাফ সিদ্দিকীর গল্প অবলম্বনে আজিজ ভাই তাঁর প্রথম ছবিÑ‘সাইফুল মুলক বদিউজ্জামাল’ নির্মাণ করেন। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬৭ সালে। এই ছবিটির পরে তিনি উর্দু ভাষায়ও নির্মাণ করেন। আজিজ ভাই বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান মিলিয়ে প্রায় ৫৪টি ছবি পরিচালনা করেন। প্রায় সবগুলো ছবি বাণিজ্যসফল এবং দর্শকপ্রিয়।
আমরা আজিজ ভাইর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্বাদের, রসের সুন্দর-সুন্দর ছবি উপহার পেয়েছি ‘মেরে আরমান মেরে সাপনে’, ‘সাত সেহেলী’, ‘পারদেমে রাহেনে দো’ নামে তিনটি উর্দু ভাষায় ছবি নির্মাণ করেন। বাংলা ভাষায় তার নির্মিত ছবি যেমন ‘রঙিন রূপবান’, ‘কুঁচ বরণ কন্যা’, ‘মধুমালা’, ‘অতিথি’, ‘শাপমুক্তি’, ‘সমাধান’, ‘অনুভব’, ‘অশিক্ষিত’, ‘স্বীকৃতি’, ‘পরিচয়’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘গড়মিল’, ‘ঘর ভাঙ্গা ঘর’, ‘মেহমান’, ‘অভিমান’, ‘জয় বিজয়’, ‘ছুটির ঘন্টা’, ‘অমর প্রেম’, ‘অহংকার’, ‘অগ্নিকন্যা’, ‘তালবেতাল’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘রঙিন রূপবান’, ‘শীশমহল’, ‘বাপবেটা ৪২০’, ‘জিদ’, ‘দিল’, ‘ভাইভাবী’, ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’, ‘কথা দাও’, ‘লজ্জা’, ‘মায়ের আঁচল’, ‘আলিবাবা ৪০ চোর’, ‘জমিদার বাড়ীর মেয়ে’, ‘জোহরা’ এবং ‘মাটির ঘর’ সহ আরো আরো অনেক সিনেমার নির্মাতা তিনি।
আজিজ ভাই প্রযোজক হিসেবেও অনেক ছবি নির্মাণ করেছেনÑযার মধ্যে একটি হচ্ছে মতিন রহমানের পরিচালনায় নির্মিত ‘লাল কাজল’। ছবিটি বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলো।
দুঃখজনক হলেও সত্য জীবদ্দশায় আজিজভাই কোনো রাষ্ট্রীয় পুরস্কার কিংবা পদক পাননি। কেন পাননি সেই প্রশ্নটি আমার কাছে আজও দুর্বোধ্য। তাঁর মৃত্যুর পর রাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের কোনো ব্যক্তি, এমনকি আমাদের তথ্য মন্ত্রণালয় থেকেও কোনোরকম শোকবাণী পাইনি, যদিও পাওয়া উচিত ছিল। তবে আশার কথা যে, আজিজ ভাইয়ের নির্মিত ছবির দর্শকপ্রিয়তা ছিল খুব। এবং দর্শকদের ভালোবাসাই হচ্ছে একজন সিনে পরিচালকের বড়া পাওয়, বড় পুরস্কার।
এই জটিল জীবনে নানান সমস্যায় জড়িত মানুষেরা যখন আজিজ ভাইয়ের সিনেমা দেখে একটু কেঁদেছেন, হেসেছেন; রূপালী পর্দায় আঁকা চলমান ছবির মায়ায় বিনোদিত হয়েছেন, লাখো মানুষের হাতের তালি আর বাহবায়, ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেনÑসেটাই হচ্ছে বড় পুরস্কারÑ যা আজিজ ভাই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের হৃদয়ে বঁচে থাকবেন বহুকাল...।
আমি রভবে অবাক হইÑযা আমাকে চুম্বকের মতো আজিজ ভাইয়ের ব্যক্তিত্বের দিকে টানেÑ তা হলো, তিনি কেমন করে সারাজীবন আমাদের ইন্ডাস্ট্রির লোকজন-শিল্পী-কুশীলবের কাছে সমানভাবে প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছিলেন এবং কী করে নিরপেক্ষ মানুষ হিসেবে সর্বমহলে নিজেকে ধরে রাখতে পেরেছিলেন। কারো সঙ্গেই তাঁর বিরোধ ছিল না, ছিল না কোনো সংঘাত। তিনি যেন আমাদের সবার কাছে সব অভিযোগের উর্ধ্বে ছিলেন। তিনি সবসময়ই সকলের প্রাণের মানুষ হয়ে টিকে ছিলেন, এখনও আছেন।
গত ১৪ মার্চ ২০২২ তারিখে আজিজ ভাই এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে মহাপ্রস্থানের পথে পা বাড়ালেন, চলে গেলেন অন্যলোকে। তখন মনে-মনে আমার দেখা আজিজ ভাইকে চোখের পর্দায় ভাসালাম। পরিচয়ের পর থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত একটিবারের জন্যেও এমন কোনো দৃশ্য ভেসে উঠল না যেখানে দেখলামÑআজিজভাই কারো সঙ্গ কোনো রকমের বাজে ব্যবহার কিংবা খারাপ আচরণ করছেন। বুকে হাত রেখে বলছি-তাঁর মন্দ কিছুই খুঁজে পাইনি। শিবলী ভাইর সঙ্গে খুব সখ্য ছিলো আজিজ ভাইয়ের। দুজনের গ্রামের বাড়ি যমুনার ওপারেÑশান্তাহার আর চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
শিবলী ভাইয়ের সঙ্গে আমি কাজ করার সুবাদে আজিজ ভাইয়ের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা আগের চেয়ে বেড়ে যায়। তারা দুজন যখন একে অপরের সঙ্গে কথা বলতেন তখন আমি দারুণভাবে উপভোগ করতাম। কান খাড়া করে রাখতাম নতুন কিছু শেখার জন্য, জানার জন্য। তাঁরাইতো আমাদের গুরু ছিলেন, শিক্ষক ছিলেন, ছিলেন আমাদের স্কুল।
আমি কোনোদিনই সহকারী হিসাবে আজিজ ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করিনি। কিন্তু তারপরও আজিজ ভাই ছিলেন আমার কাছে সিনেমার একজন প্রিয় শিক্ষক। আজিজ ভাই কোথাও শুটিং করছেন জানলেই সেটে চলে যেতাম। কখনো-কখনো একা, আবার কখনো-কখনো শিবলী ভাইয়ের সঙ্গে। আজিজ ভাইয়ের সহকারী এবং শ্যালক টিপু ছিল আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ওর কারণেও প্রায়ই আজিজ ভাইয়ের সান্নিধ্যে আমার যাওয়া হতো। টিপুও অনেক আগেই এই দুনিয়া ছেড়ে অকালে চলে গেছে! সিনেমার সেটে-শুটিংয়ে কিংবা পরিচালক সমিতিতে শিবলীভাইর সঙ্গে কিংবা সে ছাড়াও আজিজ ভাই যেখানেই সিনেমা নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা আলাপ করতেন বা কিছু বলতেন, সামনে উপস্থিত থাকলেই আমি গোগ্রাসে প্রিয় শিক্ষকের লেকচার হিসাবে গিলতাম। আজ যেখানে এসে দাঁড়িয়েছি তা তো তাদেরই কল্যাণে।
‘সৎ মানুষ‘ সিনেমার নির্মাণের মধ্য দিয়ে ১৯৯২‘এ আমি পরিচালক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলাম। তখনো আজিজ ভাই একজন নিরহংকারী মানুষের মতন সিনেমা নিয়ে আমার ভাবনা এবং পরিকল্পনার খোঁজ-খবর নিতেন, উপদেশ দিতেন এটা কর-ওটা কর বলে। সিনেমার অতি কঠিন বিষয়গুলোর সহজ সমাধান আজিজ ভাইয়ের কাছেই পেতাম। দিনেদিনে তিনি এমনই সিনেমার বিশাল এক অভিধানে পরিণত হয়েছিলেন।
যদি কেউ আমাকে প্রশ্ন করে- আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রের শুদ্ধ মানুষটির নাম কী? আমার উত্তর হবেÑ আজিজুর রহমান! এ-জগতে তিনি ছাড়া কোনো পরিশুদ্ধ মানুষ নেই এমন বলা হয়তো ঠিক হবে না, কিন্তু আমার মতে তার শুদ্ধতা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই, থাকা বোধহয় উচিতও নয়।
প্রিয় আজিজ ভাই, এখন থেকে আর কোনোদিন অলক্ষ্যে পিঠের ওপর হঠাৎ আপনার স্নেহময় ছোঁয়ায় আর চমকে উঠব না! আপনি আর জানতে চাইবেন নাÑ কিরে কেমন আছিস, কি করছিস, ভালোতো? না, আপনার অকাল প্রয়াণে আমি বা আমরা ভালো নেই! আপনাকে হারিয়ে ফেলার একটা নিগুঢ় কষ্ট থেকেই বলছি, আমরা ভালো নেই, আগের মতো আর ভালো নেই আমদের সিনেমাও...।
শেষ কথা, প্রিয় আজিজ ভাই, আপনি ভালো থাকবেন। আমাদের সিনেমার জগতে আজীবন আপনি যেমন একজন নিপাট, ভালো, সাদা মনের মানুষ ছিলেন, তেমনই ভালো থাকবেন ওপারেও! ভালো থাকবেন সেখানেও- মহান আল্লাহর সাত আসমানের যেখানে আপনি এখন আছেন...।
লেখক : বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক
একটা কথা আজকাল শোনা যায়, ‘আমাদের গল্পে আমাদের সিনেমা’। আপনার সিনেমাগুলো কতখানি আমাদের সিনেমা?
আমার প্রথম ফিল্ম গেরিলা’, ওটা ১৯৭১ সালের গল্প। একান্তই আমাদের গল্প। তারপর ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’, এটা ঢাকা শহরেরই গল্প। ‘পায়ের তলা মাটি নাই’ একান্তই আমাদের সিনেমা। কাজ করেছি ‘গুণিন’-এ, এটাও হাসান আজিজুল হকের গল্প। আমাদেরই গল্প এটা। রুবাইয়েত হোসেনের ‘শিমু’, এটাও আমাদের গল্প। নাম শুনলেই বোঝা যায় গল্পগুলো আমাদেরই। যেমন, ‘ইতি তোমার ঢাকা’। গল্প আলাদা করে বলার দরকার নেই। টাইটেল শুনেই বোঝা যায় এগুলো আমাদের গল্প।
আপনি অনেক বছর ধরে অভিনয় করছেন। অথচ ইদানিং গণমাধ্যমে আপনার নামটি ঘন ঘন আসছে। আপনি কি প্রচারবিমুখ অভিনেতা নাকি আপনিই ইদানিং নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন?
প্রচারমুখীও না, প্রচারবিমুখও না। এখন প্রচার পাওয়ার কারণ হচ্ছে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া। ভালো কাজ বা কিছু হলে এমনিতেই প্রচার হয়। তাছাড়া আমার অ্যাক্টিং করার এপ্রোচের মধ্যেও চেঞ্জ এসেছে। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ থেকে আমার কনসেনট্রেশন চেঞ্জ হয়েছে। ক্যারেক্টার বাছাই করার ব্যাপারে অনেক কনশাস হয়েছি। যে কারণে ভালো গল্প, চরিত্র, এফোর্টÑ তিনটাই চেঞ্জ হয়েছো, তাই হয়তো কাজগুলো চোখে পড়ছে।
সব অভিনেতার জীবনেই একটা টার্নিং পয়েন্ট বলা হয়। আপনার ক্যারিয়ারে ‘মি. জনি’-ই কি সেই টার্নিং পয়েন্ট?
আমার টার্নিং পয়েন্ট বলতে গেলে আমি বলব ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র কথা। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র দুয়েক বছরের মধ্যে ‘মি. জনি’ করি। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র স্ক্রিপ্টটা যখন আমি পাই, তখনই আমার মনে হয় যে চরিত্রটার অনেকগুলো শেড আছে, চরিত্রটার বিভিন্ন ইনার কনফ্লিক্ট আছে, এগুলো পড়ে আমি খুব উত্তেজিত হই। তখন আমার বোধোদয় হয় যে, গত অনেক বছর ধরেই অভিনয় করছি, কিন্তু চরিত্রগুলোর প্রতি আমি সুবিচার করতে পারছি কি না। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’তে আমি খুব সচেতন ছিলাম যে, আকর্ষণীয় একটা চরিত্র পেয়েছি, পরে কখনো যেন আফসোস না হয় যে এত জোশ একটা চরিত্র পেয়েছি, কিন্তু আমি করি নাই। ওখান থেকেই সিদ্ধান্ত নেই যে ধরে নেব যে এটাই আমার শেষ অভিনয়। এতে আমি এই পরিমাণ এফোর্ট দেব যেন পরে আমি রিগ্রেট না করি। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র পর থেকেই এই এপ্রোচে কাজ করা শুরু করি। ২০১৫ সালে আমরা ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’ শুট করি, ২০১৬ সালে এটা সিঙ্গাপুর ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যায়। বাংলাদেশের মানুষ এটা দেখেছে ২০১৯-এ। দর্শকরা ‘মি জনি’ দেখেছে আগে।
একটা চরিত্রকে ধারণ করার জন্য আপনার কী রকম প্রস্তুতি থাকে? শুনেছি, ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র জন্য আপনি নাকি সবসময় ক্র্যাচে ভর করে হাঁটতেন?
এটা ডিপেন্ড করে আসলে। একেকটা চরিত্রের জন্য প্রিপারেশন একেকরকম হয়। আমার যে অবস্থান আর চরিত্রটার যে অবস্থান, দুটোর দূরত্বের ওপরে নির্ভর করে কতখানি এফোর্ট আমাকে ওই চরিত্রটার জন্য দিতে হবেÑফিজিক্যালি, মেন্টালি, সাইকোলজিক্যালি। কিছু ক্ষেত্রে মেন্টাল ডিসটেন্স অনেক বেশি। কিছু জায়গায় ফিজিক্যাল ডিসটেন্স অনেক বেশি। যেখানে দূরত্ব বেশি হয়, সেখানে তত কাজ করা লাগে। যেখানে দূরত্ব কম, সেখানে কাজ কম করতে হয়। যে জায়গায় দূরত্ব বেশি ওই জায়গায় কাজ করতে হয়। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’-তে ক্র্যাচ নিয়ে হেঁটেছি, কারণ আমার যে প্রপসটা ওটার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য, যেন মাথার মধ্যে অলওয়েজ থাকে যে এই ক্যারেকটারটা আমি করছি। এটা নিয়ে কোনো সমঝোাতা করা যাবে না। প্রতি স্টেপেই আমার মাথায় ছিল এই চরিত্রটা। এই ক্র্যাচটা যতটা না আমাকে ফিজিক্যালি হেল্প করেছে, তারচেয়ে বেশি হেল্প করেছে মেন্টালি। আমি সাইকোলজিক্যালি অনেক কাজ করি ক্যারেক্টার নিয়ে। চরিত্রের আইডোলজি কী, ও কী ধরনের ভেল্যুজ নিয়ে বড় হয়েছে, ওর পৃথিবীকে দেখার ভঙ্গিটা কী, ওর কাছে কোনটা রাইট কোনটা রং। কিংবা কীভাবে ও সবকিছু জাজ করে। আমি দিনের হয়তো দু তিন ঘন্টা ওই ক্যারেক্টারটা হয়ে থাকি। ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’র চরিত্রটা হচ্ছে সাজ্জাদ। হয়তো আমি কোথাও যাচ্ছি, জ্যামের মধ্যে বসে আছি, ধরে নেই যে আমি সাজ্জাদ। জ্যামে থাকলে আমি মনওয়ার আমার চিন্তাগুলো করি। কিন্তু তখন আধঘন্টা বা এক ঘন্টা আমি সাজ্জাদ হয়ে থাকি। সাজ্জাদ হয়ে গেলে ও কই যাচ্ছে, ওর গন্তব্য কী, ও নেক্সট কী করবে, ওর গার্লফ্রেন্ড রেহানাÑও ফোন দিবে কী দিবে না; সাজ্জাদের চিন্তাগুলো আমি করতে থাকি। এই চিন্তাগুলো করলে কিছুদিন পর নিজেকে ওই চরিত্রটা মনে হয়। শুটের আগে আমি নিজেকে কনফিডেন্টলি বলতে পারি যে আমি সাজ্জাদ। অতএব চরিত্রটায় খারাপ পারফরমেন্সের প্রশ্নই আসে না। নিজেকে আমি বুঝ দেই যে, আমিই এই চরিত্রটা। রবার্ট ডি নিরো এলেও এটা আমার চেয়ে ভালো করতে পারবে না। ডি নিরোর তো এটা অ্যাক্টিং করতে হবে, আমার তো অ্যাক্টিংয় করতে হবে না। ওই চরিত্রটাই তো আমি! নিজেকে বুঝ দেই যে ওই চরিত্রটাই আমি, আমাকে অ্যাক্টিং না করলেও চলবে।
ওয়েব সিরিজ নিয়ে কথা বলা যাক। ওয়েব সিরিজ কি আশীর্বাদ হয়ে এলো অভিনয় শিল্পীদের জন্য? বলা হচ্ছে, ওয়েব সিরিজে তারকার চেয়ে শিল্পীর প্রাধান্য বেশি।
প্রাধান্য পায় গল্প। গল্পকে ফুঁটিয়ে তোলার জন্য দরকার হয় ভালো অ্যাক্টর ও এক্সিকিউশন। ভালো গল্পটা তখনই ভালো হয় যখন গল্পটা ওয়েল এক্সিকিউটেড হয় বা বিশ্বাসযোগ্য হয়। বিশ্বাসয্যো হওয়ার একটা দায়িত্ব পালন করেন অ্যাক্টররা। গল্প যেহেতু প্রধান এখানে, তাই দর্শকদের কাছে হয়তো ম্যাটার করে না কে স্টার কে স্টার না। কে গল্পটার পারপাস সার্ভ করতে পারছে ওই জায়গা থেকে অ্যাক্টর নেয়া হয়। এই জায়গা থেকে আর্শীর্বাদ যে শুধু বাংলাদেশে না অনেক দেশেই যারা ভালো অ্যাক্টর, আগে যাদের কাজ দেখি নাই তাদের ওপরেও একধরনের আলো পড়ছে।
‘তারকা’ অভিধাটির প্রতি আপনার কোনো দুর্বলতা কিংবা বিরোধিতা আছে আপনার? শিল্পীর জন্য তারকা হওয়াটা আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?
একজন শিল্পী তারকাখ্যাতিকে কীভাবে ডিল করছেন তার ওপরে অনেককিছু নির্ভর করে। কারো কাছে এটা আশীর্বাদ হয়ে আসতে পারে। তারকাখ্যাতি হচ্ছে একধরনের সীমাবদ্ধতা। তারকাখ্যাতি মানে অনেক মানুষের অনেক এক্সপেকটেশন।ওই এক্সপেকটশেনর রেসপন্স করতে গিয়ে ওরা চায় আমাকে এভাবে দেখুক এই জিনিষগুলো মানুষ কেয়ার করা শুরু করে। ওর এত ফ্যানবেজ ওদের মতো করতে গিয়ে যেটা হয় যে ট্র্যাপে পড়ে টাইপকাস্ট হয়ে যাওয়ায় ভয় থেকে যায়। আর তারকা না হলে আমাকে কাউকে স্যাটিফায়েড করতে হবে না। আমি নিজেকেই স্যাটিসফায়েড করতে চাই। পারসোনলি আমার মনে হচ্ছে আমি এই জায়গাটা এক্সপ্লোর করব, ওই ফ্রিডমটা তারকা না হলেই পাওয়া সম্ভব। আমি কারো এক্সপেকটেশন মেটানোর জন্য কাজ করছি না। আমি আসলে যেমনটা নিজে চাই তেমনটাই করছি। বাই ডিফোল্ট যদি এগুলো সবার পছন্দ হয় তবে এটাই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ অবস্থা। তারকাখ্যাতিও রইল, আমি আমার ফ্রিডমটা নিয়েও কাজ করছি।
মঞ্চ ও সিনেমার তফাৎটা মোটা দাগের। নাটকের সঙ্গে সিনেমার তফাৎ করতে গিয়ে অনেকেই হিমশিম খান। ওয়েব সিরিজ আসার পর আমরা যেন আরো সংকটে পড়েছি। অভিনেতা হিসেবে আপনি কিভাবে মাধ্যমগুলোকে আলাদা করেন?
২০০৫ সালে শেষ আমি থিয়েটার করেছি। থিয়েটার থেকে ক্যামেরায় চলে আসি তখন বেশ এবকটু সমস্যা হয়েছিল আমার। আমার অনেক সময় লেগেছে ছন্দে ফিরতে সময় লাগছে। থিয়েটার করে আসার কারণে লং শটে অনেক বেশি হাত পা ছুঁড়ি অনেক জোরে কথা বলি। টিভিতে কাজ করতে গিয়ে কতটুকু টোনডাউন করতে হয় ওটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছিল। থিয়েচটার এত চেনা জায়গা যে স্বচ্ছন্দ ছিলাম। কিন্তু ক্যামেরায় এসে স্বতস্ফূর্ততা ছিল না। একসময় ক্যামেরাটাও বুঝতে শুরু করি আমি। এই পরিবর্তনগুলো শুধু বাইরের বিষয়Ñকত জোরে কথা বলব কত কম জোরে কথা বলব। অ্যাক্টিংয়ের যেকোনো প্রিপারেশরনটা ইন্টারন্যাল। প্রস্তুতিটা সব মাধ্যমে একই রকম। তেলরং একরকম, জলরঙ একরকম; কিন্তু কী আমি আঁকতে চাই সেটাই আসল। আমি কোন জিনিষটা ফুঁটিয়ে তুলতে চাইÑএটাই হচ্ছে চিন্তার বিষয়।
একদিকে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, আরেকদিকে তামিম মৃধা; সবার সঙ্গেই কাজ করেছেন, করছেন। নতুন প্রজন্ম কি পূর্বসুরিদের পতাকা বয়ে নিয়ে যেতে পারছে? অভিনেতা হিসেবে আপনার
ভাবনা কী?
আমার নতুনদের সঙ্গে কাজ করতে বেশি ভালো লাগে। পূর্বসুরিদের মধ্যে যাদের মধ্যে নতুনদের মতো ক্ষুধাটা আছে তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। নতুনরা যখন কাজ করে তাদের নিজেকে প্রমাণ করার ব্যাপার থাকে। নতুনদের আলাদা উচ্ছ¡াস থাকে। যদি সরয়ার ফারুকী ভাইয়ের কথা বলি। ভেবেছিলাম এখন হয়তো কোনেকিছু তাকে এট্রাক্ট করবে না। অথচ কাজ করতে গিয়ে দেখলাম এতদিন কাজ করেও উনি এখনো এক্টাইট ফিল করেন। পুরনোদের মধ্যে যারা নতুনদের মতো আচরণ করেন তাদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে। যারা নিজেকে আপডেট রাখেন তাদেরকে ভালো লাগে আমার।
নিজস্ব প্রতিবেদক
তীব্র শ্লেষ আর সমাজের অসঙ্গতি নিয়ে বিদ্রæপে ঠাসা এক সিনেমা এবার কান উৎসবে পেল সেরার পুরস্কার, যে চলচ্চিত্রের শেষ হয়েছে দীর্ঘ এক বমির দৃশ্যে।
বিবিসি জানিয়েছে, শনিবার পালে দে ফেস্টিভাল ভবনের গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে এবারের উৎসবের সমাপনী আয়োজনে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পাম দ’র উঠেছে সুইডিশ নির্মাতা রুবেন ওস্টলান্ডের হাতে।
তার সিনেমা ‘ট্রায়াঙ্গেল অব স্যাডনেস’ এর চরিত্ররা কেউ ফ্যাশন তারকা, কেউবা টাকার কুমির। কিন্তু অপ্রত্যাশিত সব ঘটনা তাদের খ্যতি আর অর্থের জেল্লা ধুয়ে দিয়ে আদি মনুষ্য চেহারা প্রকাশ্যে আনে।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বার স্বর্ণ পাম জিতলেন সুইডিশ চলচ্চিত্রকার রুবেন ওস্টলান্ড। আর্ট মিউজিয়ামের এক কিউরেটরের গল্প নিয়ে বানানো তার সিনেমা ‘দ্য স্কয়ার’ ২০১৭ সালে কানে সেরার পুরস্কার জিতেছিল।
কানের এবারের আসরে সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নির্মাতা পার্ক চ্যান-উক। ২০০৩ সালে ক্রাইম থ্রিলার ‘ওল্ডবয়’ নির্মাণ করে আলোচনায় আসা উক এবার কানের সম্মাননা পেয়েছেন ‘ডিসিশন টু লিভ’ সিনেমার জন্য।
দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য শনিবার একটি শুভ দিন হয়েই এসেছিল কানে। ব্রোকার সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন কোরিয়ার সং কাং হো। তার অভিনীত সিনেমা প্যারাসাইট ২০১৯ সালের অস্কার জিতেছিল।
‘কিং অব ক্রিনজ’ সিনেমার নির্মাতা ওস্টলান্ড ‘ট্রায়াঙ্গেল অব স্যাডনেস’ নিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এমন কিছু করতে চেয়েছিলেন, যা নিয়ে লোকে কথা বলবে।
“যখন আমরা এই সিনেমার কাজ শুরু করি, আমাদের একটি লক্ষ্য ছিল... সত্যি, সত্যিকার অর্থেই দর্শকদের জন্য রোমাঞ্চকর এবং মানুষকে ভাবাবে এমন বিষয়গুলো নিয়ে সিনেমা বানাতে চেয়েছিলাম।
“আমরা মানুষকে বিনোদন দিতে চেয়েছি, চেয়েছি তারা নিজেরা নিজেকে প্রশ্ন করুক। চেয়েছি পর্দা উঠলে তারা সিনেমার কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলুক।”
ওস্টলান্ডের সিনেমা সত্যিকার অর্থেই দর্শকের মনোযোগ পেয়েছে। সিনেমার প্রিমিয়ারে দর্শকরা কখনও হাসতে হাসতে কেঁদে ফেলেছেন, কখনও তাদের ওপর ভর করেছে বিষাদ।
‘ট্রায়াঙ্গেল অব স্যাডনেস’ এর দৃশ্য শুরু হয়েছে ব্রিটিশ অভিনেতা হ্যারিস ডিকিনসন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার চার্লবি ডিনকে নিয়ে, যারা একটি বিলাসবহুল প্রমোদতরীতে ভ্রমণ করছেন।
কিন্তু হঠাৎ তারা নিজেদের আবিষ্কার করেন আটকা পড়া অবস্থায়। সামাজিক অবস্থান ভুলে বেঁচে থাকার তাগিদই তাদের মধ্যে বড় হয়ে ওঠে।
বিনোদন ম্যাগাজিন ‘ভ্যারাইটি’ লিখেছে, এ সিনেমা আপনাকে হাসাবে; আর ওস্টলান্ড আপনাকে ভাবাবেন।
কোন বিভাগে কে বিজয়ী
স্বর্ণপাম: ট্রায়াঙ্গেল অব স্যাডনেস (পরিচালক রুবেন ওস্টলান্ড)
গ্র্যাঁ প্রি: যৌথভাবে ক্লোজ (পরিচালক: লুকাস ডোন্ট) এবং স্টারস অ্যাট নুন (পরিচালক: ক্লেয়ার ডেনি)
সেরা পরিচালক: পার্ক চ্যান-উক (সিনেমা: ডিসিশন টু লিভ)
সেরা চিত্রনাট্যকার: তারিক সালেহ (সিনেমা: বয় ফ্রম হ্যাভেন)
জুরি পুরস্কার : যৌথভাবে ইও (পরিচালক: ইয়াজি স্কলিমোস্কি) এবং দ্য এইট মাউন্টেন ( পরিচালক: শার্লট ফান্দারমিয়ার্স ও ফেলিক্স ফন খ্রোনিনেন)
কান উৎসবের ৭৫ বছর পূর্তির পুরস্কার: জ্যঁ-পিয়েরে ও লুক দারদেন (সিনেমা: টরি অ্যান্ড লকিটা)
সেরা অভিনেত্রী: জার আমির ইব্রাহিমি (সিনেমা: হলি স্পাইডার)
সেরা অভিনেতা: সং কাং হো (সিনেমা: ব্রোকার, দক্ষিণ কোরিয়া)
সেরা স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি: দ্য ওয়াটার মারমার্স ( পরিচালক: জিয়ানিং চেন)
স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি (বিশেষ সম্মাননা): মেলানকলি অব মাই মাদারস লুলাবিস (অবিনাশ বিক্রম শাহ)
ক্যামেরা দ’র: ওয়ার পনি (পরিচালক: রাইলি কিয়াও ও জিনা গামেল)
ক্যামেরা দ’র (বিশেষ সম্মান): প্ল্যান সেভেনটি ফাইভ (পরিচালক হায়াকাওয়া চিয়ে)
আঁ সার্তে রিগা
সেরা চলচ্চিত্র: দ্য ওয়র্স্ট ওয়ানস (পরিচালক: লিসে আকোকা ও রোমানে গিউরে)
জুরি প্রাইজ: জয়ল্যান্ড (পরিচালক: সায়েম সাদিক)
সেরা পরিচালক: আলেকপ্রন্দ্রæ বেল্ক (সিনেমা: মেট্রোনম)
সেরা অভিনয়: ভিকি ক্রাইপস (সিনেমা: করসেজ) এবং অ্যাডাম বেসা (সিনেমা: হারকা)
সেরা চিত্রনাট্য: মেডিটেরানিয়ান ফিভার (পরিচালক: মাহা হাজ)
ডেস্ক রিপোর্ট
জীবন-মৃত্যুর প্রান্তে
সামনে শূন্যতা৷ ঝাঁপ দিলেই সব শেষ৷ মত বদলের কোনো অবকাশ নেই৷ কিন্তু মনের কোণে সামান্য সংশয় তো থেকেই যায়৷ বেঁচে না থাকলে সেই সংশয় যাচাই করার কোনো উপায় আছে কি?
আবেগ নয়, চাই যুক্তি
পৃথিবী থেকে চিরবিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেও সেটি দ্রুত কার্যকর না করাই বুদ্ধিমানের কাজ৷ নেতিবাচক আবেগের কালো মেঘ কেটে গিয়ে যুক্তির খুঁটি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত মন থেকে দূর করতে পারে৷
চরম কষ্টের তাড়না
আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের পেছনে থাকে চরম বেদনা, হতাশা বা গ্লানি৷ সেই কষ্ট সহ্যের সীমা অতিক্রম করে যায়৷ দিশাহারা অবস্থায় মনে হয়, সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে৷ অথচ সেই কষ্ট কম করা, তা নিয়ে চলতে পারাও কিন্তু সম্ভব৷
‘এই জগতে আমাদের ঠাঁই নেই’
একা নয়, প্রিয় মানুষটিকে সঙ্গে নিয়ে পার্থিব জগত ছেড়ে চলে যাবার কঠিন সিদ্ধান্তও নেন কেউ কেউ৷ সমাজ, ধর্ম, সম্প্রদায় বা রাষ্ট্র তাদের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় কোণঠাসা হয়ে মৃত্যুই একমাত্র পথ বলে মনে হয়৷ অথচ বিকল্প কি একেবারেই থাকে না?
অন্যের প্রতি দায়িত্ববোধ
জগতটা শুধু নিজেকে নিয়ে নয়৷ নিজের দুঃখ, কষ্ট, কঠিন সমস্যার গণ্ডির বাইরেও আছে এক বৃহত্তর পৃথিবী৷ অন্যরাও সেখানে পুরোপুরি সুখি নয়৷ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ, সম্ভব হলে তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে নিজের মনও শান্ত হতে পারে৷ অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নিজের জগত দেখলে নতুন উপলব্ধি জাগতে পারে৷
নিঃসঙ্গতা থেকে আত্মহত্যার হাতছানি
নিঃসঙ্গতা, চরম একাকিত্ববোধ থেকেও আত্মহত্যার চিন্তা মনে আসে৷ অথচ নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার বদলে চারিদিকে তাকালে কাউকে না কাউকে ঠিকই পাওয়া যাবে৷ পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী বা অন্য কোনো বৃত্তের মধ্যে এমন কাউকে খুঁজে নেওয়া সম্ভব, যে দুঃখ-বেদনার কথা শুনতে প্রস্তুত৷ মন হালকা হলে আত্মহত্যার হাতছানিও উধাও হয়ে যাবে৷
যেসব পরিবারে বাবা-মা ধূমপানে আসক্ত, তাদের সন্তান ধূমপায়ী হয়ে ওঠার আশঙ্কা অধূমপায়ী পরিবারের তুলনায় অন্তত চারগুণ বেশি। সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকারের এক গবেষণায় উদ্বেগজনক এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসির।
যুক্তরাজ্যের ‘বেটার হেলথ স্মোক ফ্রি’ প্রচারণায় এ গবেষণা তথ্য তুলে ধরা করা হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে, বড়রা ধূমপান করলে ছোটদের ওপর তার কতটা মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে বাবা-মা ধূমপান করেন এমন ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কিশোর-কিশোরী ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়েছে। বিপরীতে, বাবা-মা ধূমপায়ী নন, এমন পরিবারের সন্তানদের ধূমপায়ী হওয়ার হার মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ।
ক্ষণিকের জন্য ধূমপান করা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও ধূমপায়ী-অধূমপায়ী পরিবারের পার্থক্য প্রায় দ্বিগুণ। যুক্তরাজ্যে অল্প সময়ের জন্য ধূমপান করা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ২৬ শতাংশ ধূমপায়ী বাবা-মায়ের পরিবার থেকে আসা। অধূমপায়ী পরিবারে এর হার ১১ শতাংশের মতো।
ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাগি থ্রুপ জানিয়েছেন, এই পরিসংখ্যান বাবা-মায়েদের ধূমপান ছাড়তে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করবে। ধূমপান ত্যাগ তাদের নতুন বছরের লক্ষ্য হবে, এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তিনি।
ম্যাগি থ্রুপ বলেন, আমরা জানি, অনেক লোক জানুয়ারিতে ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করেন। নিজের স্বার্থে ধূমপান ত্যাগের অনেক কারণ রয়েছে। এরপরও আমরা আশাবাদী, সন্তানের ওপর পড়া প্রভাবের গুরুত্ব বিবেচনায় অনেক অভিভাবককে ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করবে নতুন প্রচারাভিযান।
ধূমপান ছাড়তে আগ্রহীদের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় সবধরনের সহায়তা দেবে বলে আশ্বস্ত করেছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী।