দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৩ শতাংশ করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১৬টি জেলা পিছিয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে আজ খ্রিষ্টীয় নতুন বছরে সারা দেশের করোনা টিকার বড় ক্যাম্পেইন (প্রচারণা) শুরু হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনা টিকার এটিই হবে সবচেয়ে বড় ক্যাম্পেইন।
পরিসংখ্যান বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাতে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ৯ কোটির বেশি টিকা রয়েছে। টিকার বড় মজুত গড়ে ওঠায় বড় আকারের ক্যাম্পেইন করার উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পিছিয়ে থাকা ১৬টি জেলার তালিকা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে আছে: ভোলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, কুমিল্লা, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট। এসব জেলায় মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ এখনো টিকা পাননি। অন্যদিকে গাজীপুর জেলায় টিকাদানের হার সবচেয়ে বেশি। এই জেলায় ৫৬ শতাংশ মানুষ ইতিমধ্যে টিকা পেয়েছেন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের জনসংখ্যার জেলাভিত্তিক যে হিসাব ২৮ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে তাতে বলা হচ্ছে, দেশের জনসংখ্যা এখন ১৭ কোটি ৩ লাখ ১৭ হাজার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনার টিকাবিষয়ক কমিটির সদস্যসচিব ডা. শামসুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থা সন্তোষজনক। আমাদের মূল পরিকল্পনায় ছিল আমরা ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের টিকার আওতায় আনব। ওই বয়সীদের ৬২ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রথম ডোজ এবং ৪৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ করোনার টিকা পেয়েছেন।’ তিনি বলেন, পিছিয়ে থাকা জেলাগুলো টিকা দেওয়ায় খুব বেশি পিছিয়ে নেই। ১ জানুয়ারি শুরু হওয়া ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে তারা বাকি সব জেলার পর্যায়ে চলে আসবে।
আজ শুরু ক্যাম্পেইন
আজ শনিবার সকাল থেকে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) সারা দেশের গ্রামের কেন্দ্রগুলোতে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে। এ রকম কেন্দ্র আছে ১ লাখ ১০ হাজার। এসব কেন্দ্রে নিয়মিতভাবে শিশু ও নারীদের টিকা দেওয়া হয়। ইপিআইয়ের মাধ্যমে টিকা দেওয়ায় দেশের ৯৫ শতাংশের বেশি মানুষ প্রয়োজনীয় টিকা পায়। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সুখ্যাতি আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা টিকাদানে গতি বাড়াতে ইপিআইয়ের শক্তিকে কাজে লাগাতে যাচ্ছে। ইপিআইয়ের কেন্দ্র ব্যবহার করে মাসে ৩ কোটি ৩২ লাখ মানুষকে করোনার টিকা দেওয়ার নতুন লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে বলে শামসুল হক জানিয়েছেন।
দেশে ইউনিয়ন আছে ৪ হাজার ৬১১টি। প্রতিটি ইউনিয়নে ৯টি ওয়ার্ড আছে। এসব ওয়ার্ডে ইপিআই টিকাকেন্দ্র আছে ২৪টি করে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন করে করোনার টিকা দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মাঠকর্মী ছাড়াও স্থানীয় এনজিও কর্মীরা টিকা কার্যক্রমে যুক্ত থাকবেন। ক্যাম্পেইনে সিনোফার্ম, সিনোভ্যাক ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হবে।
টিকার মজুত
দেশে এ পর্যন্ত টিকা এসেছে ২২ কোটি ২ লাখ ৩৭ হাজার। প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার মিলে মোট ১২ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৭ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকার মজুত আছে ৯ কোটি ৪৬ লাখের বেশি।
এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি এসেছে চীনের সিনোফার্মের টিকা। ১০ কোটির বেশি টিকা এসেছে এই একটি প্রতিষ্ঠান থেকে। সিনোফার্মের টিকা ছাড়াও অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোভ্যাক, ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে।
Most Popular
নিজেকেই স্যাটিসফায়েড করতে চাই
একটা কথা আজকাল শোনা যায়, ‘আমাদের গল্পে আমাদের স...
নিজেকেই স্যাটিসফায়েড করতে চাই
বাংলা চলচ্চিত্রের শুদ্ধ মানুষ
২০১৮ বিশ্বকাপে মেসি আর বর্তমান আর্জেন্টিনার মেসি এক নয়,
বিধ্বস্ত মেসিকে খুব কমই দেখ...