শরৎকালীন দুর্গাপূজা পশ্চিমবঙ্গের প্রধান হিন্দু উৎসব। বাংলা পঞ্জিকার আশ্বিন বা কার্তিক মাসে (সেপ্টেমর-অক্টোবর মাসে) এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্গার পূজা বসন্তকালের উৎসব হলেও, রাম শরৎকালে তার পূজা করেছিলেন। এই পূজা অকালবোধন নামে পরিচিত।তাই বাসন্তী পূজা এখনও প্রচলিত থাকলেও, শারদীয়া দুর্গাপূজাই মহাসমারোহে পালিত হয়।
বাঙালিরা এই উৎসবকে হিমালয়ে দেবী দুর্গার বাপের বাড়ি ফেরার অনুষ্ঠান হিসেবেই দেখে। বাঙালি সমাজে এই পূজা উপলক্ষে নতুন পোশাক পরার চল রয়েছে। পূজার সময় মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে প্রতিমা দর্শনও বাঙালিদের একটি বিশেষ প্রথা।
মহানবমীর দিনে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলোয় ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপছে পড়া ভিড় ছিল। মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তরা অঞ্জলি ও ভোগ দিয়েছে। নবমী পূজা ও সন্ধ্যা আরতি শেষে বিদায়ের সুর বাজতে শুরু করেছে। আজ বুধবার বিজয়া দশমীতে বিদায় নেবেন মা দুর্গা।
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনের দুর্গাপূজা শেষ হবে আজ। নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে সন্ধ্যার আগেই প্রতিমা বিসর্জনের নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
হিন্দু সনাতন শাস্ত্র মতে, নবমী তিথিতে রাবণ বধের পর রাজা শ্রী রামচন্দ্র এই পূজা করেছিলেন। নীলকণ্ঠ ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় নবমী বিহিত পূজা। নবমী পূজার মাধ্যমে মানবকুলে সম্পদ লাভ হয়। তাই শাপলা- শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে দশভুজা দেবীর পূজা হয়েছে গতকাল। নীল অপরাজিতা ফুল মহানবমী পূজার বিশেষ অনুষঙ্গ। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হয়। ১০৮টি বেলপাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয় গত শনিবার। বিজয়া দশমীতে দেবী বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে আজ। বিজয়া দশমীতে আজ প্রতিমা বিসর্জনের আগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে সদরঘাট গিয়ে শেষ হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক বলেন, ‘ঢাকা ও ঢাকার বাইরে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবার দুর্গোৎসব হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমরা আনন্দমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করছি। ’
গতকাল রাজধানীর বেশ কটি পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মণ্ডপগুলোয় সকাল থেকে মানুষের উপস্থিতি শুরু হয়। বিকেলের দিকে এ উপস্থিতি ভিড়ে পরিণত হয়।
উৎসবকে ঘিরে রাজধানীসহ দেশজুড়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় সন্তুষ্টি জানিয়েছেন হিন্দু ধর্মীয় নেতারা।
তাঁরা বলছেন, দুর্গোৎসবে করোনা মহামারির প্রভাব কাটিয়ে আবারও অনুসারীদের পদচারণে মুখরিত হয়েছে মন্দির-মণ্ডপ। এ উৎসবকে ঘিরে সনাতন ধর্মের মানুষের মাঝে বিপুল আনন্দ বিরাজ করছে। দেবী মায়ের কাছে প্রার্থনা, দেশ-জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সবার সুখ ও সমৃদ্ধি হোক।
আজ বিজয়া দশমীতে সরকারি ছুটি। এ উপলক্ষে বাংলাদেশের গণমাধ্যম গুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।
Most Popular
নিজেকেই স্যাটিসফায়েড করতে চাই
একটা কথা আজকাল শোনা যায়, ‘আমাদের গল্পে আমাদের স...
নিজেকেই স্যাটিসফায়েড করতে চাই
বাংলা চলচ্চিত্রের শুদ্ধ মানুষ
২০১৮ বিশ্বকাপে মেসি আর বর্তমান আর্জেন্টিনার মেসি এক নয়,
বিধ্বস্ত মেসিকে খুব কমই দেখ...