বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বলতে বিশ্বব্যাপী
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে যে অস্থায়ী কিংবা স্থায়ী নেতিবাচক এবং ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তার যাবতীয় চুলচেরা বিশ্লেষণকে বোঝানো তবে একথা অনস্বীকার্য যে, বিশ্বব্যাপি জলবায়ুর পরিবর্তন শুধুমাত্র প্রাকৃতিক কারণেই নয়, এর মধ্যে মানবসৃষ্ট কারণও সামিল। বাংলাদেশে একাধারে সমুদ্রস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা সমস্যা, হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন, বন্যা ইত্যাদি সবগুলো দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং হচ্ছে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রাও অনেক অনেক বেশি। বাংলাদেশ, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় শীর্ষে।
দেশে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো খ্রিস্টিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশের (সিসিডিবি) ক্লাইমেট সেন্টার। জলবায়ু নিয়ে গবেষণা ও বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাজে এ সেন্টার ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট।
দেশে লো-কার্বন প্রযুক্তি খুঁজে বের করার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে সিসিডিবি।
শনিবার (১ অক্টোবর) গাজীপুরের শ্রীপুরে সিসিডিবির নিজস্ব এ ক্লাইমেট সেন্টার উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমনিতেই প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা নিয়ে সারাবিশ্ব চিন্তিত। এর প্রভাব মোকাবিলা করা আমাদের মতো দরিদ্র দেশের জন্য কষ্টসাধ্য। দরিদ্র মানুষেরা ঝুঁকির মধ্যে বেশি। দারিদ্র্যপীড়িত মানুষরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশ। আর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হলো কৃষি খাত। আমাদের জিডিপির একটা বড় অংশীদার হলো কৃষিখাত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ, সিসিডিবি ক্লাইমেট অ্যাডভাইজারি বডির কো-চেয়ার অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, সিসিডিবি কমিশনের চেয়ারম্যান ডেভিড এ হালদার, সিসিডিবির নির্বাহী পরিচালক মিস জুলিয়েট কেয়া মালাকার ও সিসিডিবি ক্লাইমেট অ্যাডভাইজারি বডির সদস্য ড. সালিমুল হক প্রমুখ।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, আমাদের সমস্যা হলো আমরা গবেষণা করি না। অন্য দেশ থেকে প্রযুক্তি কিনে আনি। আমাদের উচিত বাইরে থেকে প্রযুক্তি এনে আমাদের জন্য কোনটা উপযুক্ত সেটা গ্রহণ করা। আমাদের গবেষণা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের নেতিবাচক প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। হঠাৎ করে আরও বাড়বে। এর জন্য কী করণীয় সেটা ভাবতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে খ্রিস্টিয়ান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিসিডিবি) নির্মিত এই ক্লাইমেট সেন্টার সম্পর্কে জানানো হয়, জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় পাঁচটি প্রধান বৈশিষ্ট্য নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নে নিজস্ব ৫৭ একর জমির ওপর স্থাপিত বাংলাদেশের প্রথম ক্লাইমেট সেন্টার যাত্রা শুরু করেছে।
বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি পরিবেশগত অঞ্চল- উপকূল, খরাপ্রবণ এলাকা, চরাঞ্চল, পাহাড়ি ও হাওর অঞ্চলকে এ সেন্টারের অন্তর্ভুক্ত ক্লাইমেট পার্কে মডেল হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে। একটি জলবায়ু সহনশীল জনগোষ্ঠী তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।
ক্লাইমেট সেন্টার সম্পর্কে আরও জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত অভিযোজন, প্রশমন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস সংশ্লিষ্ট ৭০টিরও বেশি সময়োপযোগী ও ব্যবহারোপযোগী প্রযুক্তি প্রদর্শন ছাড়াও ক্লাইমেট সেন্টারে থাকছে- ক্লাইমেট লার্নিং সেন্টার, ডিজিটাল থিয়েটার, এক্সিবিশন জোন, কনফারেন্স হল, লাইব্রেরি, রিসার্চ সেন্টার ও চিলড্রেন লার্নিং জোন; যা জলবায়ু সহনশীল সমাজ গঠনে সহায়তা করবে। ক্লাইমেট সেন্টারে গাইড ট্যুরেরও ব্যবস্থা থাকছে।
Most Popular
নিজেকেই স্যাটিসফায়েড করতে চাই
একটা কথা আজকাল শোনা যায়, ‘আমাদের গল্পে আমাদের স...
নিজেকেই স্যাটিসফায়েড করতে চাই
বাংলা চলচ্চিত্রের শুদ্ধ মানুষ
২০১৮ বিশ্বকাপে মেসি আর বর্তমান আর্জেন্টিনার মেসি এক নয়,
বিধ্বস্ত মেসিকে খুব কমই দেখ...