চিনেবাদাম’ ছবিতে এনার চরিত্রটা খুব সাদামাটা। যেমন আর ৫টা মেয়ে হয়, তেমনই। রোজকার জীবনের মতো অভিনয় করা একদিকে যেমন কঠিন, অন্যদিকে ভালোলাগারও। ছবিতে এনার চরিত্রের নাম তৃষা। তৃষার চরিত্রে অভিনয় করাও দারুণ অভিজ্ঞতা। সে আর পাঁচটা মেয়ের মতোই সাধারণ, যার ছোট ছোট চাহিদা রয়েছে। সে তার প্রেমিকের সঙ্গে সময় কাটাতে চায়, খুব আবেগপ্রবণ। সব মিলিয়ে তার ‘চিনেবাদাম’ দারুণ অভিজ্ঞতা। বর্তমান সময়ে মুঠোফোনের কবলে পড়ে যেন হারিয়ে যাচ্ছে নির্ভেজাল আড্ডা আর সঙ্গের চিনেবাদাম। সেই গল্পকেই ছবির পর্দায় তুলে ধরেছে এই ‘চিনেবাদাম’-ছবির গল্পে। বন্ধু খোঁজার জন্য নতুন অ্যাপ তৈরি করে বিদেশ থেকে ফেরা ছবির নায়ক। তৈরি হয় নতুন অফিস, নতুন লোকজন। সবসময়ের সঙ্গী প্রেমিকা তৃষা। বন্ধু খুঁজে পাওয়ার অ্যাপ ‘চিনেবাদাম’ সাফল্য পায় অল্প সময়ের মধ্যেই। কিন্তু তারপর এই অ্যাপকে ঘিরেই তৈরি হয় বিভিন্ন সমস্যা। মান-অভিমান, সম্পর্কের টানাপোড়েনের সম্মুখীন হয় ছবির নায়ক-নায়িকা। তাদের মিষ্টি প্রেম বদলে যায়। বন্ধু খুঁজে দিতে গিয়ে বন্ধুহীন হয়ে পড়ে ছবির নায়ক নিজেই। টলিউডে হট আর বোল্ড অভিনেত্রী হিসাবেই পরিচিত এনা সাহা। নিজের অভিনয়ের পাশাপাশি দুঃসাহসী দৃশ্যে অভিনয় করতেও পিছু পা হননি কোনোদিন। চুলবুলি ও মিষ্টি মেয়ে এনা সোশ্যাল মিডিয়ায় সদাই অ্যাক্টিভ। দু’বছর আগেই ঘুরে এসেছেন দুবাই। কিন্তু কার সঙ্গে, সেটা কিন্তু রহস্য। মাঝে গুজব রটেছিল ‘চিনেবাদাম’-সিনেমার প্রযোজনার কাজে এনাকে সাহায্য করছেন তার বড়লোক প্রেমিক। কিন্তু সেই গুজব একেবারে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন এনা। তবে এক সাক্ষাৎকারে এনা তার প্রেম নিয়ে অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন। হ্যাঁ, সম্পর্কে রয়েছেন এনা সাহা। অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি কমিটেড। বেশ কয়েক বছর ধরে রয়েছি সম্পর্কে। যদিও সে এই ইন্ডাস্ট্রির কেউ নন।’ এনা জানান তার প্রেমিককে তিনি আগে থেকেই চিনতেন, তবে নামটা বলেননি। খুব ছোট বয়স থেকেই অভিনয় জগতে পা রেখেছেন এনা। এরপর একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে গেছেন তিনি। খুব অল্প বয়সেই হাত পাকিয়েছেন প্রযোজনার কাজেও। প্রযোজনা ও অভিনয় দুটোই সামলাচ্ছেন দক্ষ হাতে। তার দুবাইয়ে ঘোরার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় ঝড়ের বেগে। এনার বোল্ড ও হট ছবি দেখে ভক্তরা রীতিমতো ভিমরি খেয়েছে। তখনো প্রশ্ন ওঠেছিল এনা কার সঙ্গে দুবাই পাড়ি দিয়েছেন? টলিউডের কনিষ্ঠতম এই প্রযোজকের ‘চিনেবাদাম’ ছবিটি বেশ ভালোই ব্যবসা করছে। অভিনয়, প্রযোজনা, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কাজÑ সব নিয়ে বেজায় ব্যস্ত এনা। নেই দম ফেলার ফুরসৎ। ঘুমের জন্য বরাদ্দ তিন ঘণ্টা। নিজে নায়িকা হলেও জীবনসঙ্গী হিসেবে চান না কোনো নায়ককেই! বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল এই নায়িকার অনুরাগীর সংখ্যা কিন্তু নেহাত কম নয়। সদ্য প্রযোজনাতেও হাত দিয়েছেন তিনি। ছোট থেকে কোন পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার স্বপ্ন ছিল তার? যদি এনা নায়িকা না হতেন? হাসতে হাসতে এনার উত্তর, ‘তাহলে আমি ব্যাঙ্কিং নিয়ে কাজ করতাম বা সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করতাম। কারণ ওই চাকরিগুলোতে প্রচুর টাকা। ২০১১ সালে ‘আমি আদু’ ছবির মাধ্যমে টলিউডের বাংলা সিনেমায় কলকাতার মেয়ে এনার পথচলা শুরু। এরপর ‘প্রিয়া তুমি’, ‘ওয়ান থার্টি এম’, ‘বোঝে না সে বোঝে না’, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার টু’, ‘রাজকাহিনী’, ‘ভ‚ত চতুর্দশী’, ‘এসওএস কলকাতা’, ‘ফোর্স’, ‘ব্যোমকেশ ফিরে এলো’, ‘রাজকাহিনি’, ‘যুধিষ্ঠির’, ‘এক যে আছে অপ্সরা’, ‘কমরেড’, ‘কিছু না বলা কথা’, ‘বক্সার’, ‘দ্য হ্যাকার’র মতো জনপ্রিয় ছবিগুলোতে তাকে দেখা গেছে। সিনেমার পাশাপাশি ছোটপর্দায় বিভিন্ন সিরিয়ালে, টিভি শো’তে এনা কাজ করেছেন। প্রযোজক হিসেবেও নিজের সক্ষমতা দেখিয়েছেন তিনি। ‘এসওএস কলকাতা’, ‘চিনেবাদাম’ ছবিগুলো প্রযোজনা করেছেন এনা সাহা। কয়েকটি মালায়লাম এবং তেলেগু সিনেমায় তাকে দেখা গেছে। অভিনেতা যখন তারকা, দুনিয়া তার পদানত। কিন্তু যতক্ষণ তারকা নন? পেশা নিয়ে হাজার লোকের লক্ষ কটাক্ষ! ভুক্তভোগী এনা সাহা। সেই কথা তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেনও। স্কুলের পাশে যখন দাঁড়িয়ে থাকত প্রোডাকশন হাউজের গাড়ি, স্কুলের পোশাক পরেই এনা হাজির হতেন সেটে। রুপালি পর্দার সঙ্গে সেই তো সম্পর্কের শুরু। এরপর সিনেমা, অভিনয় এবং বর্তমানে প্রযোজনাও। সতীর্থদের থেকে অনেকটা অল্প বয়সেই সবকিছু সামলাচ্ছেন তিনি। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখে তাকেও বহুবার সহ্য করতে হয়েছে অপমান! তার আক্ষেপ, খুব ছোট থেকেই অভিনয়ে। অভিভাবকেরা বুঝতে পারতেন না যে এটা তার পেশা। তিনি বলেন, ‘সকলে ভাবতেন, খারাপ কাজ করি। তাই তাদের মেয়েদের মিশতে দিতেন না আমার সঙ্গে। ছেলেবেলায় স্কুলে তাই কোনো বন্ধু ছিল না।’ তার মা বনানী সাহা জানান, ছোটবেলা থেকে তার মেয়ে নাচের অনুষ্ঠান করত। সেখান থেকেই ইন্ডাস্ট্রির নজরে আসে এনা। প্রযোজকেরা বনানীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এনাকে অভিনয়ে আনার জন্য। ছোট থেকে নানা মাধ্যমে কাজ করতে করতে নবম শ্রেণিতে প্রথম বড়পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ পান ‘চিনেবাদাম’ ছবির নায়িকা-প্রযোজক এনা। তারপর আর তাকে পিছনে ফিরে দেখতে হয়নি।
রেজাউল করিম খোকন
কর্মসংস্থান খুঁজতে মানুষ মধ্যপ্রাচ্যে যেতে দালাল চক্রের দারস্থ হয়, কিন্তু তাদেরকে লোভ দেখিয়ে পাচার করে আফগানিস্তানে পাঠানো হলে দেখা যায় বাংলাদেশের অনেক মানুষকেই সেখানে জিম্মি রাখা হয়েছে। তারপর তাদের দিয়ে নানাভাবে ড্রাগ পাচারের কাজে লিপ্ত করানো হয় অন্যায়ভাবে। মূলত তাদের রক্ষা করার জন্যই প্রশাসনের একজন যোগ্য অফিসারকে (এ জে) বাংলাদেশের পুলিশ অধিদপ্তর থেকে তুরস্কে পাঠানো হয়। মারদাঙ্গা এই অফিসার এক ভয়ংকর অপরাধী আবু খালিদকে ধরতে দুর্গম সব যাত্রাপাড়ি তুরস্ক থেকে ইরান তারপর আফগানিস্তান যান। তারপর কিভাবে এ জে তাদের রক্ষা করে সেটা নিয়েই গল্প।
দিন দ্য ডে মুভিতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের বহুল আলোচিত সমালোচিত চলচ্চিত্র অভিনেতা অনন্ত জলিল। চলচ্চিত্রটি ইরানের ফারাবি সিনেমা ফাউন্ডেশন ও অনন্ত জলিল যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে। নায়িকা হিসেবে রয়েছেন বর্ষা।
মুভিতে দেশকে নানাভাবেই রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াদ’র কর্মযজ্ঞকেই বেশি হাইলাইটস করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাছাড়া পরিচালক বাংলাদেশ ব্যতীত ইরান, আফগানিস্তান, হেরাত, মরক্কো, তুরস্ক প্রভৃতি দেশের সংস্কৃতিকে এ সিনেমায় তুলে ধরেছেন।
ক্যামেরার কাজও বেশ ভালো হয়েছে। টেকনোলজিতে নিশ্চিতভাবে কোনো কার্পণ্য করেনি সিনেমা কর্তৃপক্ষ।
তাছাড়া পুরো সিনেমার সঙ্গে পরিচালকসহ অভিজ্ঞ একটি ইরানি টিম জড়িত ছিল।
সিনেমার গানগুলোর চিত্রায়ন দৃষ্টিনন্দন। ‘ভেজা চোখে’ গানটি লিখেছেন তারেক আনন্দ এবং গানটির সুরকার ও শিল্পী ইমরান মাহমুদুল। আর শুভাশিষ ঘোষের লেখা ‘তোকে রাখবো খুব আদরে’ গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমরান মাহমুদুল এবং গেয়েছেন ইমরান ও আতিয়া আনিসা। ইরানি সংগীত পরিচালকের গানটিও শ্রæতিমধুর।
সিনেমার শুটিং হয়েছে মূলত দেশের বাইরে। ইরান, আফগানিস্তান বা তুরস্কের দৃষ্টিনন্দন জায়গা দেখা যাবে পাখির চোখে। প্রত্যেকটি দৃশ্যই আপনার দেখতে ভালো লাগবে।
অনন্ত জলিল অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন। এছাড়া সিনেমায় যেসব বিদেশি অভিনয় শিল্পীরা ছিলেন তাদের অভিনয়ও মনোমুগ্ধকর ছিল।
বিগ বাজেট, দেশপ্রেম, বিদেশি সংস্কৃতির সন্নিবেশসহ, আলোক সজ্জা, রূপসজ্জাসহ নানা কারণেই ছবিটি নতুন আলোচনার দাবি রাখে। যারা অ্যাকশন মুভি পছন্দ করেন তাদের কাছে ছবিটি ভালো লাগতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য অনন্ত জলিলের
‘দিন : দ্য ডে’ মুভিটি নিঃসন্দেহে একটি মাইলফলক।
ফিরোজ আহমেদ বাবলু
হালে সুপারহিট ছবি এক ভিলেনের সিকুয়্যাল ‘এক ভিলেন রিটার্নস’ মুক্তি পেয়েছে। রহস্য, রোমাঞ্চ, অ্যাকশনে ভরপর এ ছবিতে দিশা পাটানিকে এক ধূসর চরিত্রে মানে খলনায়িকার ভ‚মিকায় দেখা গেছে। মধ্যবিত্ত মেয়ের চরিত্র হলেও সৌন্দর্যই যার আসল হাতিয়ার। এককথায় সে মোটেও ভালো মেয়ে নয়। এ ছবিতে দিশাকে অ্যাকশন করতেও দেখা গেছে। এ প্রসঙ্গে দিশা বলেন, ‘অ্যাকশন-থ্রিলার আমার অত্যন্ত প্রিয় ঘরানা। তাই এই ছবিতে কাজের সুযোগ পেয়ে আপ্লুত।’ ‘এক ভিলেন রিটার্নস’ ছবিতে দিশা পাটানিকে দেখা গেছে জন আব্রাহামের সঙ্গে জুটি বাঁধতে। দিশার জন্য অবশ্য এটা নতুন অভিজ্ঞতা নয়। আগে সালমান খানের সঙ্গে ‘রাধে : মোস্ট ওয়ান্টেড ভাই’ ছবিতে রোমান্স করেছেন। এবার পর্দায় নায়ক-নায়িকার এই বয়সের ব্যবধান নিয়ে মুখ খুলেছেন দিশা। নিজে সালমান, জনের মতো সিনিয়র অভিনেতার বিপরীতে কাজ করেছেন। বয়সে অনেক বড় নায়কদের সঙ্গে কাজ করার প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ নিয়ে আমার কিছু যায়-আসে না। ছবির চরিত্রের ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। পর্দায় মানানসই হওয়া নিয়েই কথা। আমি মনে করি, নায়কেরা যদি অনেক কম বয়সী নায়কদের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, তাহলে নায়িকাদের ক্ষেত্রেও তা-ই হওয়া উচিত। নায়িকারাও তাদের চেয়ে বয়সে ছোট নায়কদের সঙ্গে জুটি বাঁধতেই পারেন। তবে তা নির্ভর করছে দর্শকের ওপর। দর্শক যদি এটাকে খোলা মনে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকেন, তাহলে আমরা শিগগিরই বলিউড ছবিতে পরিবর্তন দেখতে পাব। কারণ, দর্শকই আমাদের সব।’ দিশা বলিউডে পা রেখেছিলেন ‘এমএস ধোনি : দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ ছবির মাধ্যমে। তার সেক্সি ফিগারে ফিদা প্রচুর মানুষ। ‘ধোনি’ থেকে ‘এক ভিলেন রিটার্নস’ পর্যন্ত তার অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে এই বলিউড অভিনেত্রী বলেন, ‘কেন জানি না, আজও যেকোনো ছবি করার সময় মনে হয়, সেটাই আমার প্রথম ছবি। প্রতিটি ছবির চরিত্র অনুযায়ী যে বদলের প্রয়োজন, তার ওপর মন দিই। ক্যারিয়ারে কী করলাম, তা নিয়ে মাথা ঘামাই না।’ চলতি বছর দিশার আরও বেশ কয়েকটি ছবি মুক্তি পাবে। কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে দিশার ছবি ‘এক ভিলেন রিটার্নস’। এছাড়াও তার হাতে আছে ‘প্রোজেক্ট কে’, ‘যোধা’, ‘কেটিনা’। অ্যাকশন-থ্রিলার ছবি ‘যোধা’য় আরও আছেন সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ও দক্ষিণি অভিনেত্রী রাশি খান্না। ছবিতে অভিনয়ের জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়েছেন দিশা। নিজের স্টান্ট নিজেই করেছেন। এছাড়া বহুল প্রতীক্ষিত সায়েন্স ফিকশন ‘প্রজেক্ট কে’-তেও আছেন দিশা। এ ছবিতে আরও আছেন অমিতাভ বচ্চন, প্রভাস ও দীপিকা পাড়ুকোন। ছবিটি ২০২৩ সালে মুক্তি পাবে। ২০১৭ সালে হয়েছিল দিশা ও টাইগার সম্পর্কের সূত্রপাত। ২০১৮ সালে ‘বাঘী-২’ ছবিতে প্রথমবার একসঙ্গে অভিনয় করেন তারা। পরে একটি মিউজিক ভিডিওতেও দেখা যায় এই জুটিকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই জুটি একে অপরের সাথে ডেট করছিলেন। জানা গেছে, দিশা পাটানির সাথে শেষমেষ সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে টাইগারের। গোটা ইন্টারনেট দুনিয়াতে এই দুই তারকা জুটির বিচ্ছেদের গল্প এখন ট্রেন্ডিং। টাইগার দিশাকে বিয়ের প্রতিশ্রæতি দিলেও শেষমেষ দুজনের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। দিশা পাটানির সাথে বিচ্ছেদের পরপরই টাইগার শ্রফ নতুন প্রেমে পড়েছেন। দিশার ক্যারিয়ারের শুরু হিন্দি ছবির মাধ্যমে নয়, বরং দক্ষিণী সিনেমা জগতের মাধ্যমে বড়পর্দায় তার যাত্রা শুরু। ‘লোফার’ নামের একটি তেলুগু ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন দিশা। ২০১৫ সালে এই ছবিটি মুক্তি পেলেও বক্স অফিসে সফল হয়নি। তবে, বলিউডে তার প্রথম ছবি ‘এমএস ধোনি : দ্য আনটোল্ড স্টোরি’তে অভিনয় করেই তিনি সাফল্যের শিখরে পৌঁছেন। শুধু বড় পর্দাতেই নয়, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন নামি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন প্রচারের মুখও তিনি। প্রতি মাসে ছয়টি বিজ্ঞাপনে কাজ করেন অভিনেত্রী। প্রতি বিজ্ঞাপনে তিনি দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেন। সামাজিক কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে তার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। শিশুকল্যাণ বিষয়ক সামাজিক কাজেও দিশা তার পারিশ্রমিকের একাংশ দান করেন।
রেজাউল করিম খোকন
বলিউডে এ প্রজন্মের সেনসেশন কিয়ারা আদভানি। এই সময়ের সবচেয়ে ব্যস্ত অভিনেত্রীও। পরপর বেশ কয়েকটি সুপারহিট সিনেমায় অভিনয়ের পর তার রূপের আবেদন ও অভিনয়ে মাতোয়ারা দর্শক। তাই অভিনেত্রীর পেশাগত জীবনের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এখন আরও বেশি চর্চা হয়। কিয়ারার প্রতিটি পদক্ষেপে থাকে এক অন্য স্বাদের গল্প বলার তাগিদ। নিজের অভিনীত প্রতিটি সিনেমায় তিনি নিজেকে ভেঙে গড়েছেন। ‘শের শাহ’, ‘ভুল ভুলাইয়া ২’, ‘যুগ যুগ জিও’র মতো সিনেমায় সাফল্য পাওয়া কিয়ারা আদভানি অকপটে বলেন, ‘যখন সিনেমায় সাইন করি, তখন ভাবি না যে তা এত হিট হবে।’ কিয়ারা বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠেছেন। কয়েকদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে তাকে আলিয়া ভাট ও দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে তুলনা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন, ‘এ তুলনা তাকে অনুপ্রেরণা দেয়। আলিয়া ও দীপিকা দারুণ অভিনয় করেন, তাই তাদের সঙ্গে আমার যখন কেউ তুলনা করেন, আমার জন্য তা প্রেরণাদায়ক। তারা দারুণ অভিনেত্রী। আমি মনে করি, আমি হয়তো কিছু কাজ ঠিক করেছি। আমি নিজেও তাদের কাজ পছন্দ করি, আর সে কারণে এই তুলনা আমাকে আরও অনুপ্রেরণা দেয়।’ এখন খুবই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কিয়ারা। তার হাতে আরও যেসব কাজ রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণের সুপারস্টার রামচরণ অভিনীত ‘আরসি ১৫’। এছাড়া তার হাতে রয়েছে ‘গোবিন্দ নাম মেরা’। এতে তিনি ভিকি কৌশল এবং ভ‚মি পেডনেকারের সঙ্গে অভিনয় করছেন। স¤প্রতি ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনের মুখোমুখি হন কিয়ারা আদভানি। ওই সাক্ষাৎকারে কিয়ারা জানান, তিনি ছোটবেলা থেকে নায়িকাই হতে চেয়েছেন। সেভাবেই নিজেকে গড়ে তুলেছেন। এজন্য কড়া ডায়েট মেনে চলেন।
অভিনেতা সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে প্রেম করার বিষয়টি সরাসরি স্বীকার না করলেও তাদের প্রেমের উপাখ্যান সবারই জানা। শোনা যায়, শিগগির তারা বিয়েও করবেন। সেটা এ বছরই হবে কি-না, তা নিশ্চিত নয়। ‘বিয়ে করছেন কবে’Ñ গত দুই বছরে এ প্রশ্নটি বহুবার শুনতে হয়েছে কিয়ারা আদভানিকে। শুরুতে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেও এখন আর উত্তর দিতে দ্বিধা করেন না। কারণ এতদিনে এই কিয়ারা বুঝে গেছেন, বিয়ের পিঁড়িতে না বসা পর্যন্ত এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই হবে। এদিকে বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করার বিষয়টি আরও বেড়েছে অভিনেতা সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগার পর। বিয়ে করছেন কবে? এর উত্তর দিতে গিয়ে রীতিমতো রসিকতায় মেতে ওঠেন কিয়ারা। বলেন, ‘যা কিছুই করি, এই জীবনে অন্তত একবার বিয়ে করবই। নইলে রেহাই পাব না।’ তবে কিয়ারা জানালেন, ২০২২ সাল শেষ হওয়ার আগেই তিনি একটি ইচ্ছা পূরণ করতে চান। সেটা হলো খ্যাতিমান নির্মাতা সঞ্জয়লীলা বানসালির একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়া। যদিও সেই ইচ্ছে সহসা পূরণ হবে কি-না, তা কেবল বানসালিই জানেন।
ক্যারিয়ারের সেরা সময় উপভোগ করছেন কিয়ারা আদভানি। প্রেমিক সিদ্ধার্থ মালহোত্রার সঙ্গে শেরশাহ’র পর এবার কার্তিক আরিয়ানের সঙ্গে ‘ভুল ভুলাইয়া-২’, বরুন ধাওয়ানের সঙ্গে ‘যুগ যুগ জিও’ পরপর তিন ছবি সুপার-ডুপার হিট। এখনই কিয়ারা প্রায় ২৩ কোটি টাকা সম্পত্তির মালিক। ২০১৪ সালে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। ‘ফুগলি’ তার প্রথম ফিচারফিল্ম। পরবর্তীকালে ‘এমএস ধোনি : দ্য আনটোল্ড স্টোরি’, ‘কবীর সিং’, ‘লাস্ট স্টোরিজ’ ছবিতে তার অভিনয় প্রশংসা পেলেও ‘লাস্ট স্টোরিজ’-এ মাত্রাতিরিক্ত যৌনতা থাকায় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। এই ছবিতে যথেষ্ট সাহসী চরিত্রে অভিনয় করেন কিয়ারা। তারপর ‘শেরশাহ’-তে সিদ্ধার্থের সঙ্গে আলোচনার তুঙ্গে ছিলেন তিনি। এই ছবির মাধ্যমেই সমালোচনার যোগ্য জবাব দিয়েছেন বলেও তার অনুরাগীরা মনে করেন। এখন পর্যন্ত কিয়ারা আদভানি ফিল্ম প্রতি ২-৩ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেন। ‘কবীর সিং’ ছবির জন্য তিনি নিয়েছেন তিন কোটি টাকা। ‘শের শাহ’, ‘ভুল ভুলাইয়া-২’, ‘যুগ যুগ জিও’ হিট হওয়ায় কিয়ারার পারিশ্রমিক বেড়ে ৫-৬ কোটি টাকা হয়েছে। ব্র্যান্জ এন্ডোর্সমেন্টের জন্য কিয়ারা নেন ১ কোটি টাকা। এখন তিনি প্রায় ৫টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত। যার অর্থ বছরে কোটি টাকা আয় নিশ্চিত।
মহাল²ী প্ল্যানেটের গোডরেজ স্কাইস্ক্র্যাপারে তার বাড়ির দাম প্রায় ১৫ কোটি টাকা। গাড়ি পছন্দ করেন কিয়ারা আদভানি। এই ছোট্ট ক্যারিয়ারে কিয়ারার সংগ্রহে রয়েছে বিএমডবিøউ এক্স ফাইভ, যার দাম ৮০ লাখ; বিএমডবিøউ ফাইভ থ্রি ওডি, যার দাম ৭৫ লাখের বেশি। আর রয়েছে ৬০ লাখ টাকার একটি মার্সিডিজ বেঞ্জ। বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের প্রতি যথেষ্ট আকর্ষণ রয়েছে কিয়ারার। তিনি দামি পোশাক পরতে ভালোবাসেন। তার সংগ্রহে
রয়েছে প্রাদা হিল, বারবেরি জ্যাকেট, চ্যানেল ব্যাগগুলির মতো উচ্চমানের ফ্যাশনের জামাকাপড় আর অ্যাক্সেসরিজ। বর্তমানে অভিনেত্রী বুঝে-শুনে হিসাব কষে নির্বাচন করছেন সিনেমার গল্প ও চরিত্র। ক্যারিয়ারের এত দিনে এসে যেন খুঁজে পেয়েছেন নিজের গতিপথ। জানতে পেরেছেন আপন ভুবন। অভিনেত্রী বলেন, ‘এখন আমি নিজেকে অনেকটাই বুঝি। ২১ বছর বয়সে আমি অভিনয় শুরু করি। তখন আমি কে, কী চাই, কী বলতে চাই বুঝতাম না। অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছা শুরু থেকেই ছিল। কিন্তু কী ধরনের চরিত্রে, কী ধরনের গল্পে কাজ করতে চাইÑসেটা জানতাম না। এতদিনে এসে সত্যিই পথ খুঁজে পেয়েছি আমি।’ এ ছাড়াও কিয়ারা জানান, তিনি এমন সিনেমায় কাজ করতে চান, যা মানুষকে ভালো বার্তা দেবে। একই সঙ্গে বড়সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছাবে। বর্তমানে অভিনেত্রীর লক্ষ্য একটাইÑ তার সিনেমা দেখতে যেন দর্শক পরিবার নিয়ে হলে যেতে পারেন। সাফল্যের মসৃণ পথে হাঁটলেও কিয়ারা ভুলে যাননি তার অতীত, সংগ্রামের অধ্যায়। প্রথম সিনেমা ‘ফাগলি’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ার পর ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। তখন একটাই ভাবনা ছিলÑ আরেকটি সুযোগ পাবেন কি না! সিনেমাটির অন্যতম প্রযোজক ছিলেন অক্ষয় কুমার।
রেজাউল করিম খোকন
সৌন্দর্য বর্ধন করতে গিয়ে শরীর নিয়ে বলিউড তারকাদের কাটাছেঁড়া নতুন কিছু নয়। তবে তা নিয়ে প্রকাশ্যে তেমন কেউ কথা বলেন না। ব্যতিক্রম রাধিকা আপ্তে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তার অনেক বলিউড সহকর্মী অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। যা তার ভীষণ অপছন্দ। সেই সাক্ষাৎকারে এটিও রাধিকা জানিয়েছেন, বলিউডের ‘বিষাক্ত’ পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে চান বলেই শুটিং শেষে লন্ডনে স্বামীর সঙ্গে সময় কাটাতে চলে যান। তিনি জানান, ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তাকেও অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। রাধিকা বলেন, ‘যখন শুরু করি, তখন আমাকে আমার শরীর ও মুখে নানা ধরনের অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রথম সাক্ষাতেই বলা হয়, অস্ত্রোপচার করে নাকের গঠন বদল করতে। দ্বিতীয় সাক্ষাতে বলা হয়, স্তন প্রতিস্থাপন করতে। এরপর এ ধরনের কথা চলতেই থাকে। কখনো আমাকে পায়ে বা চিবুকে কিছুটা বদল আনার পরামর্শ দেওয়া হয়, আবার কখনো গালে। একসময় আমাকে বোটক্স ইনজেকশন নিতেও বলা হয়।’ অনন্যা পান্ডেও এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, তাকেও ক্যারিয়ারের শুরুতে স্তন প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কৃত্রিম সৌন্দর্য বর্ধন নিয়ে কতটা ক্ষুব্ধ তিনি, সেটি বোঝা যায় রাধিকার কথায়Ñ ‘আমি চুলে রং করালাম প্রায় ৩০ বছর পর। একটি সাধারণ ইনজেকশনও নিতে যাই না। আর আমি কি-না করাব অস্ত্রোপচার? তথাকথিত সুন্দর হতে হবে এটা আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করেনি; বরং রাগ উগরে দিয়েছে। নিজের শরীরকে বেশি করে ভালোবাসতে শিখিয়েছে।’ চেহারা থেকে বয়সের ছাপ মুছতে বোটক্স ইনজেকশন নিতে একেবারেই আগ্রহী নন তিনি। তিনি বলেন প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে কিছু করতে চান না। বয়স তো বাড়বে, এটা প্রকৃতির নিয়ম। অদ্ভুত অভিজ্ঞতার শিকার নায়িকা।
রাধিকা আপ্তে মানেই বোল্ড আর বিউটিফুল। তথাকথিত মশালা ছবির অংশ হতে কোনোদিনই দেখা যায়নি তাকে। অন্য ধারার ছবির মাধ্যমেই দর্শক মনে পাকা জায়গা করে নিয়েছেন ‘পার্চড’ নায়িকা। তবে বলিউডে যে তার ফিল্মি ক্যারিয়ার মসৃণ ছিল তেমনটা নয়। আজকের এই জনপ্রিয় নায়িকা বহুবার ‘রিজেকশন’র মুখোমুখি হয়েছেন এবং আজও হচ্ছেন। রাধিকা জানিয়েছেন ছবি থেকে বাদ পড়বার কিছু অদ্ভূত কারণ, যা শুনলে যে কেউ হয়রান হবেন। অভিনেত্রী জানান, স¤প্রতি আমাকে একটি ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, কারণ অন্য অভিনেত্রীর স্তনযুগল আর ঠোঁট আমার চেয়ে বড়। আমাকে বলা হয়েছে, ওকে বেশি সেক্সি লাগে দেখতে, আর সেটাই বিক্রি হবে। আসলে শরীরে যতœ নেওয়ায় বিশ্বাসী হলেও সেটি পালটে ফেলতে রাজি নন তিনি, পাশাপাশি নিজের অভিনয় দক্ষতাকে ঘষে মেজে আরও নিঁখুত করে তুলতেই বেশি মনোযোগ দেন তিনি। আগামীতে ‘বিক্রম বেদা’ ছবিতে দেখা যাবে রাধিকা আপ্তেকে। একের পর এক বাণিজ্যিক ছবির প্রস্তাব ফেরালেও ‘বিক্রম বেদা’-কে অগ্রাহ্য করতে পারেননি রাধিকা। ‘বিক্রম বেদা’ ছবির অভিজ্ঞতা যে আলাদাই! এই প্রথম বাণিজ্যিক ছবি করে এত আনন্দ পেয়েছেন রাধিকা আপ্তে। বড় কাজ, অথচ এতটাই গোছানো যে শুটিং স্পটে আসতে হয়েছিল মাত্র ১২ দিন। ঝটিকা সফরের মতোই শেষ হয়েছিল ‘বিক্রম বেদা’র হিন্দি সংস্করণের শুটিং। কাজ শেষ হতেই কেঁদে ভাসান রাধিকা। কেন এত মন খারাপ? রাধিকা জানান, পরিচালক দম্পতি গায়ত্রী এবং পুষ্কর দু’জনেই এত ভালো মানুষ যে, তাদের সাহচর্য ছেড়ে যেতেই ইচ্ছে করত না। ‘বিক্রম বেদা’ ছবিতে রাধিকা ছাড়াও অভিনয় করেছেন হৃত্বিক রোশন এবং সাইফ আলি খান। ২০১৭ সালে মুক্তি পাওয়া একই নামের প্রশংসিত তামিল ছবির হিন্দি রিমেক এটি। ৩০ সেপ্টেম্বর মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ছবিতে আছেন সাইফ আলী খান ও হৃতিক রোশন। বড় দুই তারকার সঙ্গে ‘বিক্রম বেদা’য় অভিনয় নিয়ে রাধিকা বলেন, ‘ছবিতে আমার চরিত্রটি যথেষ্ট জটিল। কিন্তু চরিত্রটির জন্য প্রস্তুতি নেই। মূল তামিল ছবিটি দেখেছিলাম আর সেটে অনুশীলন করেছি। আমি সাইফের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছি, বেশির ভাগ দৃশ্যই তার সঙ্গে ছিল। আগে বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট একসঙ্গে করেছি। ফলে তার সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল। ছোট একটা দৃশ্য ছিল হৃতিকের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কাজ করা দারুণ ব্যাপার।’ ছবিটি নিছক থ্রিলার নয়, একটি অন্য দর্শনের কথাও বলে। কিন্তু হঠাৎ চেনা গÐি ছেড়ে বাণিজ্যিক ছবিতে কেন এলেন রাধিকা? মুম্বাই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানান, তার আগ্রহের কারণ ছিল ছবির অন্তর্নিহিত দৃষ্টিভঙ্গি। চলতি দুনিয়াকে সাদা-কালো হিসেবে না দেখে সূ² স্তরে উপস্থাপন করেছে ‘বিক্রম বেদা’। এই ব্যাপারটাই তাকে টেনেছিল বলে জানান রাধিকা। ‘পার্চড’র অভিনেত্রীর কথায়, অনেক বড় বড় ছবির প্রস্তাব ফিরিয়েছি। কিন্তু এই চিত্রনাট্যের সঙ্গে আমার আবেগ-অনুভ‚তি মিলে গিয়েছিল। আমিও এ ভাবেই ভাবি। তাই অগ্রাহ্য করতে পারিনি। এত উপভোগ করেছি কাজ করে যে, বলার নয়! শুটিং শেষ হতে তাই কেঁদে ফেলেছিলাম। ‘বিক্রম বেদা’ ছাড়াও মনিকা, ও মাই ডার্লিং নামে রাধিকার আরেকটি ছবি আছে মুক্তির অপেক্ষায়। ৩৭-এ পা দিয়েছেন বলি অভিনেত্রী রাধিকা। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভ-এ মুক্তি পাওয়া ছবি ‘ফরেনসিক’ এ রাধিকাকে দেখা দেখা গেছে পুলিশ অফিসার মেঘা শর্মার চরিত্রে। ‘ফরেনসিক’ সেভাবে আলোচিত হয়নি। ‘সেক্রেড গেমস’, ‘ঘুল’ দিয়ে ভারতে ওটিটির জনপ্রিয়তার পেছনে বড় ভ‚মিকা রেখেছিলেন রাধিকা আপ্তে। সেই সময়ে ‘প্যাডম্যান’, ‘আন্ধাধুন’সহ বড় পর্দারও বেশ কয়েকটি আলোচিত ছবিতে কাজ করেছেন এ অভিনেত্রী। তবে ভক্তরা মনে করছেন, মুক্তির অপেক্ষায় থাকা ‘বিক্রম বেদা’ দিয়ে ঠিকই ফিরবেন রাধিকা। ভারতে ওটিটিতে সবচেয়ে সফল অভিনেত্রীদের একজন রাধিকা। তারপর আরও অনেকেই স্ট্রিমিং সাইটগুলোয় কাজ করে আলোচিত হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন দুর্দান্ত সব অভিনয়শিল্পী দারুণ সব চরিত্রে অভিনয় করছে। এটা কিন্তু আগে দেখা যেত না। অনেক নারীপ্রধান চরিত্র লেখা হচ্ছে। এটা শিল্পীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
রেজাউল করিম খোকন
আজকাল নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম, ইউটিউব ইত্যাদির কল্যাণে দক্ষিণী সিনেমার স্বাদ গ্রহণ করছেন সব দর্শক। এছাড়া বিভিন্ন টিভি চ্যানেলেও প্রতিদিন দক্ষিণী ছবির হিন্দি ডাব ভার্সন নিয়মিতভাবে দেখানো হচ্ছে। মূলত আজকাল দক্ষিণী তামিল, তেলেগু, মালায়মল, কন্নড় ভাষার ছবিগুলো হিন্দিতে ডাব হয়ে কিংবা মূল ভাষাতেই সব ভাষাভাষি দর্শকদের সামনে আসছে। এখন বলিউডি সিনেমার পাশাপাশি দক্ষিণী সিনেমাগুলো বিপুল দর্শকের কাছে আগ্রহ ও কৌত‚হলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়মিতভাবে দক্ষিণী সিনেমা দেখা দর্শকের সংখ্যা এখন অনেক। ফলশ্রæতিতে দক্ষিণী সিনেমার পাত্রপাত্রীরাও বেশ জনপ্রিয় এবং পরিচিত মুখ হয়ে ওঠছেন ঘরে ঘরে। সেখানকার জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকার নতুন নতুন সিনেমার ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখছেন অনেক দর্শক। এসব কারণে বলিউডে আজকাল দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় মুখদের নিয়ে আসার মাধ্যমে আলাদা চমক সৃষ্টির প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুধুমাত্র দক্ষিণী তামিল, তেলেগু, মালায়লাম, কন্নড় ভাষার ছবিতে কাজ করে আজকাল সন্তুষ্ট থাকছেন না সেখানকার জনপ্রিয় নায়িকারা। তারা অধিকতর সাফল্য, পরিচিতি, জনপ্রিয়তা, প্রভাব প্রতিপত্তির উচ্চাভিলাসে এখন হিন্দি সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজে অভিনয়ে উৎসাহী হচ্ছেন। নয়নতারার পরিচিতি এবং জনপ্রিয়তা এখন শুধুমাত্র তামিল তেলেগু মালায়লাম সিনেমার দর্শকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। নয়নতারা অভিনীত বেশিরভাগ ছবিই কোটি কোটি দর্শক দেখার সুযোগ পেয়েছেন। এভাবেই দক্ষিণী এই জনপ্রিয় সুপারস্টার অভিনেত্রীর পরিচিতি ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা উপমহাদেশ তথা বিশ্বজুড়ে। তাকে সবাই দক্ষিণী সিনেমার লেডি সুপারস্টার আখ্যা দিয়েছেন আরও আগেই। ১৮ বছর আগে মাত্র ১৮ বছর বয়সে সেখানকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখে শীর্ষ জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রীর আসনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনিই একমাত্র দক্ষিণী সিনেমার অভিনেত্রী, যিনি গত ২০১৮ সালে ফোর্বস ইন্ডিয়া সেরা ১০০ সেলিব্রেটিদের একজন হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী এই চিত্র তারকার অভিনীত ছবির সংখ্যা এর মধ্যেই ৭৫ অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে তামিল, তেলেগু এবং মালায়লাম তিন ভাষারই ছবি রয়েছে। এত যোগ্যতা এবং শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী অভিনেত্রীটি হলেন নয়নতারা। দক্ষিণী চিত্রলোকের নামি-দামি জনপ্রিয় তারকা অভিনেত্রীদের অনেকেই বিভিন্ন সময়ে বলিউড অঙ্গনে পা রাখলেও তাকে এ পর্যন্ত হিন্দি সিনেমায় দেখা যায়নি। যদিও বহু আগে থেকেই লোভনীয় সব অফার পেয়ে আসছেন বলিউডের বড় বড় ব্যানার, প্রতিষ্ঠিত বিখ্যাত পরিচালক প্রযোজকদের ছবিতে অভিনয়ের। নয়নতারা এতদিন বলিউডের ব্যাপারে উন্নাসিক ছিলেনÑ তা হয়তো বলা যাবেনা। তিনি উপযুক্ত সময় এবং সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। অবশেষে সেই সময় এবং সুযোগ এসেছে। দক্ষিণী চিত্রলোকের লেডি সুপারস্টার নয়নতারাও অবশেষে বলিউডে পা রাখছেন। তামিল তেলেগু মালায়লাম সিনেমার দাপুটে নায়িকা বলিউড কিং শাহরুখ খানের বিপরীতে অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমা ‘জাওয়ান’র জন্য শুটিং শুরু করেছেন। দক্ষিণী সিনেমার অঙ্গনে সাড়া জাগানো তরুণ চিত্রনির্মাতা অ্যাটলির নতুন ছবিতে বলিউড বাদশা শাহরুখ খান অভিনয় করতে যাচ্ছেনÑ এমন একটি খবর বেশ কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছিল। ‘রাজা রাণী’, ‘থেরি’, ‘মার্সাল’, ‘বিগিল’র মতো সাড়া জাগানো সব ছবির পরিচালক অ্যাটলি শাহরুখকে কাস্ট করে বলিউডে ছবি তৈরি করবেনÑ তেমন খবরে সবাই নড়েচড়ে বসেছিল। দক্ষিণী তরুণ চিত্রনির্মাতা অ্যাটলি, যিনি ইতোমধ্যে বেশ অনেকগুলো সাড়া জাগানো সিনেমা উপহার দিয়ে তরুণবয়সী দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন। সাধারণত হলিউড এবং বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন সিনেমা অবলম্বনে সফল ছবি নির্মাণে হাত পাকিয়েছেন এই অল্পবয়সী চিত্রনির্মাতা। জানা গেছে, শাহরুখ-নয়নতারা জুটির নির্মাণধীন ‘জাওয়ান’ ছবিটি বিখ্যাত স্প্যানিশ থ্রিলার ড্রামা সিরিজ ‘মানি হেইস্ট’ এর ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে। যেখানে শাহরুখকে একই সঙ্গে দ্বৈত চরিত্রে দেখা যাবে। বলিউডে একটি হাইভোল্টেজ ক্রাইম সাসপেন্স থ্রিলার ছবিতে শাহরুখ খানের বিপরীতে অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিষেক হওয়ায় নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে করছেন নয়নতারা।
বেশ কয়েকবার ফিল্মফেয়ার সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারসহ আরও বহু পুরস্কার ইতোমধ্যে নিজের ঝুলিতে পুরেছেন মেধা ও কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে। বাঙালোরের মালয়ালি খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নেওয়া মেয়েটি এয়ার ফোর্সে কর্মরত পিতার চাকরিসূত্রে ভারতের বিভিন্ন শহরের স্কুল-কলেজে পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছেন। ইংরেজি সাহিত্যে গ্রাজুয়েশন করা নয়নতারা কলেজে পড়ার সময়ে পার্টটাইম মডেল হিসেবে কাজ করতেন। তখন তার কাজ দেখে বেশ কয়েকজন চিত্রনির্মাতা নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব দেন। এভাবেই দক্ষিণী সিনেমার অঙ্গনে নয়নতারার পথচলা শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে তামিল, তেলেগু এবং মালায়লাম ছবিতে নিজেকে আবশ্যকীয় তারকা করে তোলেন। এবার বলিউডে পা রাখার মাধ্যমে নয়নতারা তার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করলেন। এই মুহ‚র্তে বলিউডের বহুল আলোচিত এবং সাড়া জাগানো কাস্টিংয়ের বড় আয়োজনের সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে ‘জাওয়ান’। তেমনি একটি ছবির মাধ্যমে দক্ষিণী সিনেমার লেডি সুপারস্টার নয়নতারার বলিউডে অভিষেক হওয়ার ব্যাপারটিও আলাদা চমক সৃষ্টি করেছে। বৃত্তের বাইরে এসে নিজের যোগ্যতা এবং সক্ষমতার প্রমাণ দিতে সচেষ্ট তিনি পুরোপুরিভাবে। পুরানো দীর্ঘদিনের কর্মক্ষেত্রের চিরচেনা পরিবেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বলিউডে কাজ করতে তার তেমন সমস্যা হবে না হয়তো-বা, তারপরও বলিউডে নিজের অভিষেকটাকে কোনোভাবেই হেলাফেলা ব্যাপার ভাবতে চান না এই দক্ষিণী লেডি সুপারস্টার।
তাহমিনা মিলি
বাঙালির কাছে দুর্গাপূজা সার্বজনীন উৎসব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব বাঙালির দুর্গাপূজার মন্ডপগুলোতে এক মহামিলনের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। তাই পূজা উৎযাপনে সাজপোশাকের প্রতি সবারই থাকে আলাদা নজর। পূজার বৈচিত্র্যময় পোশাক নিয়ে লিখেছেন শাহিনুর আলম কলি
অন্য সময়ের সাজের চেয়ে একটু যেন ভিন্ন হয় পূজার সাজ। পূজার আমেজ ধরা পড়ে সাজে। পূজার সাজ হতে পারে দুই রকম। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীতে সাজা হয় নিজের পছন্দমতো। অন্য সময়ে যেমন পোশাকে, যেভাবে সাজা হয় সে রকমই চলে এ কয়েক দিন। কিন্তু দশমীর দিনটার কথা আলাদা। এদিন সবাই চায় পূজার আমেজে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে। দশমীর দিন যে শাড়িটা পরা হয় তার পাড়টা হতে পারে বাহারি। জমিন সাদা বা লাল রঙের হতে পারে। শাড়িতে এবার পাড়ে লেইস, আলগা পাড়, বøক, চুমকি দিয়ে কাজ করা হয়েছে। পূজার শাড়িতে চুমকির কাজটা বেশ ভালো লাগে। লাল-সাদা ঢাকাই জামদানি পূজার দিনে পরলে চমৎকার দেখায়। এছাড়া লালপেড়ে গরদের আবেদন চিরন্তন। মসলিন বা সিল্কের শাড়িও পরা যেতে পারে। শাড়িতে কম কাজ থাকলেও বøাউজটা হতে পারে বাহারি। লম্বা হাতার, কুঁচি দেওয়া বøাউজ পরলে ভালো দেখাবে। ঘটিহাতাও চমৎকার লাগবে। এর সঙ্গে গয়নাটাও হওয়া চাই মানানসই। সোনার গয়না এখন তেমন পরা হয় না। এর বদলে অ্যান্টিক ধাঁচের গয়না ভালোই দেখাবে। দুই হাত ভরে পরা যায় কাচের চুড়ি। পূজার সাজের সঙ্গে চুলে তাজা ফুল থাকা চাই-ই। খোলা চুলে কানের পাশে গুঁজে দিতে পারেন যেকোনো তাজা ফুল। আর খোঁপায়ও তাজা ফুলের মালা জড়িয়ে নিতে পারেন। লালপেড়ে গরদের শাড়ি আর সাদা ধুতি-পাঞ্জাবিই আবহমান বাংলার দুর্গাপূজার পোশাকের বৈশিষ্ট্য। তা সে জমিদার বাড়ির পূজাই হোক বা বারোয়ারি। অনেক সময় গরদের শাড়ির পাশাপাশি তসর, তাঁতে বোনা সুতি শাড়ি আর এ বাংলায় যেমন জামদানি, তেমনি ও বাংলায় বালুচরিও দেখা গেছে। তবে অবশ্যই অফ হোয়াইটের সঙ্গে লাল। পূজার চিরন্তন এ রঙে প্রতীয়মান হয় আশ্চর্য গাম্ভীর্য আর পরম পবিত্রতা। জমিদারদের সময়ে দুর্গার শৃঙ্গে ব্যবহার হতো আসল গয়না। তবে যারা যে রকম খুশি সে রকমই সাজিয়েছেন দেবীকে। তারা বিশ্বাস করতেন মা তাদেরকে আরও দেবেন। এক শরতে দেবীকে যে গয়না পরানো হতো তা অনেকে পরাতেন পরের শরতেও, সেসব দিন ফুরিয়ে গেছে আজ। শ্রদ্ধা ও ভক্তি সবই অটুট আছে কিন্তু নিরাপত্তার কথা ভেবে বদলে গেছে দুর্গার শৃঙ্গার ধরন। আসল গয়নার জায়গায় স্থান পেয়েছে কারুকাজ করা শোলার গয়না। নখ, পায়েল, বিছা, চুড়ি, গলার হার সবই বানানো হয় শোলা দিয়ে; তবে আসল গয়না যে একেবারেই ব্যবহার হয় না, তা নয়। কিন্তু সময় তো আর বসে থাকে না। তাই অনেক কিছুর মতোই পূজার ফ্যাশনকেও প্রভাবিত করেছে সময়। ফলে মাত্র দশক তিনেক আগেও যে ধুতি ছিল ওতপ্রোত, সেই ধুতির জায়গা নিয়েছে পায়জামা বা আরও এগিয়ে বললে জিন্স। অন্যদিকে শাড়ির জায়গায় অনেকদিন আগেই প্রবেশাধিকার পেয়েছে সালোয়ার-কামিজ বা চুড়িদার কামিজ। এমনকি জিন্সও ব্রাত্য নেই। ফলে কোনো ম পে জিন্স-পাঞ্জাবি বা জিন্স-ফতুয়া পরা তরুণ আর জিন্স-কুর্তিতে কোনো তরুণীকে দেখলে আজ আর আমরা অবাক হই না। কারণ সমসময়ে থাকাই তো ফ্যাশন। তাই সংযোজন আর বিয়োজনকে নিয়েই এগিয়ে চলেছে পূজার ফ্যাশনও। আমাদের ফ্যাশন হাউজগুলো নান্দনিক ডিজাইনের পূজার পোশাক দিয়ে সাজিয়েছে তাদের আউটলেট। আপনি পূজার দিনের জন্য পছন্দের পোশাক কিনতে যেতে পারেন আড়ং, অঞ্জন’স, কে ক্র্যাফট, রঙ বাংলাদেশ, বিবিআনা, নগরদোলা, বাংলারমেলা, বিশ্বরঙসহ অন্যান্য ফ্যাশন হাউজগুলোতে। এবারের দুর্গাপূজার পোশাক প্রসঙ্গে অঞ্জন’সের শীর্ষ নির্বাহী শাহীন আহম্মেদ বলেন, ‘হিন্দু ধর্মালম্বী বাঙালির সবচাইতে বড় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা। পূজার পোশাক মানেই সাদা-লালপেড়ে শাড়ি। আর সাদা হলো পবিত্রতা ও শান্তির প্রতীক। এই দুয়ের মিলে ফুটে ওঠে পূজার চিরন্তন রূপ। তাই উৎসবের রঙে নিজেকে সাজাতে পূজার বর্ণিল কালেকশন এনেছে অঞ্জন’স। সিল্ক বা সুতি ফেব্রিকে থাকছে ব¬কপ্রিন্ট, এমব্রয়ডারির প্রাধান্য। পূজার প্রতীমাকে ডিজাইন মোটিফের অনুপ্রেরণা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। প্যাটার্ন বৈচিত্র্য থাকছে গতানুগতিক তারুণ্যনির্ভর। শাড়ির আঁচল, কামিজ বা কুর্তার নেক লাইন ও পাঞ্জাবির ক্যানভাসেও থাকছে স্বতন্ত্রতা। এবারের পূজোর কালেকশনে থাকছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, লং ফতুয়া, সালোয়ার-কামিজ ও শিশুদের পোশাক। তাই নিজেকে পোশাকী আভিজাত্যে রাঙাতে ষষ্ঠী থেকে দশমী বেছে নিতে পারেন অঞ্জন’সের পোশাক।’ উৎসবের ফ্যাশনে শুধু নতুনত্বই নয়, ঐতিহ্যের ছোঁয়া আছে বলেই উৎসবের সাজে সার্বজনীনতা খুঁজে পাওয়া যায় সহজেই।
আর কয়েকদিন পরই শুরু হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। সবকিছুর সাথে তাল মিলিয়ে পূজার সময় চাই নিজেকে ফ্রেশ দেখাতে। পূজার আগে রূপচর্চার কৌশলের কথা জানাচ্ছেন শাহিনুর আলম কলি
তৈলাক্ত ত্বক
গরমে মুখের ত্বকে অতিরিক্ত তেল নিঃসৃত হয়। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই ফেসিয়াল উপকারী। যেভাবে করবেনÑনিমসমৃদ্ধ টোনার ব্যবহার করুন। টোনার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে শসার নির্যাসযুক্ত ক্রিম লাগান। মুখে অ্যাকনে বেশি থাকলে ম্যাসাজ কম করবেন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এবার স্ক্র্যাবের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে ১০ মিনিট ম্যাসাজ করে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এবার অ্যাকনে জেল মুখে দিয়ে পাঁচ মিনিট রাখুন। জেল মুছে ওজা যন্ত্র দিয়ে অ্যাকনের জীবাণু বের করুন। এরপর হালকা ম্যাসাজ করুন। এক কাপ দইয়ে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ২০ মিনিট মুখে রেখে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বক আসলে স্বাস্থ্যকর ত্বক। এই ত্বকে বয়সের ছাপ সহজে বোঝা যায় না। সর্বদাই তেলতেলে থাকে বলে মেকআপের অসুবিধা হয় তবে মুখ পরিষ্কার না রাখলে ব্রণ দেখা দেয়। কাজেই রোজ দু’বেলাই ত্বক পরিচর্যা করবেন। সারা দিনে যত বেশিবার সম্ভব মুখ ধোয়া ভালো। মুখে চন্দন বা লেবুযুক্ত সাবানের ফেনা ভালো করে মাখিয়ে নেবেন। প্রথমে হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নেবেন বা বেসন দিয়ে মুখ পরিষ্কার করাও ভালো। ক্লিনজিং মিল্ক ভালো করে মালিশ করে তুলা বা টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নেবেন। সপ্তাহে তিনদিন মুখে ফেস-প্যাক লাগান। ডিমের সাদা অংশ ভালো করে ফেটিয়ে নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে বিশ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। চোখের ওপর ভিজে তুলা চাপা দিয়ে রাখুন যাতে চোখের কোণে এই মিশ্রণ না লাগে। পরে পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত একবার গরম পানির ভাপ নিন।
শুষ্ক ত্বক
শুষ্ক ত্বকের প্রধান সমস্যা হলো আর্দ্রতা ধরে রাখা। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন ত্বক হাইড্রেটেড রাখার। শুষ্ক ত্বকের জন্য রোজ ক্লিনজার ব্যবহার করতে না চাইলে বাড়িতেই ডিমের কুসুমের সাথে ১ চা চামচ অলিভ অয়েল ১ চা চামচ অরেঞ্জ জুস বা কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ক্লিনজার তৈরি করে নিন। ত্বক স্বাভাবিক হলে সমস্যাও অনেক কম হয়। ত্বকের যত্ন না হলে ত্বকের স্বাস্থ্যহানি ঘটে জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়।
মিশ্র ত্বক
মিশ্র ত্বকে মুখম লের কিছু অংশ বেশি তৈলাক্ত হয়। সেজন্য এই জাতীয় ত্বকে কোন অংশ কী রকম তা বুঝে তবেই পরিচর্যা করা ভালো। মোটামুটি স্বাভাবিক ত্বকের মতোই যত্ন নিন। তবে যে অংশগুলো বেশি তৈলাক্ত সেখানে মাঝে মাঝে এস্ট্রিনজেন্ট লোশন লাগিয়ে নিতে পারেন। তৈলাক্ত অংশে ডিমের সাদা অংশ এবং বাকি অংশে ডিমের কুসুম ও অলিভ অয়েলের ঘরোয়া ফেস-প্যাক ব্যবহার করুন, এটা উপকারী।
স্টাইলিশ হেয়ার
সাজের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো চুলের স্টাইল। চুলের স্টাইলের ওপর নির্ভর করে মানুষের ব্যক্তিত্ব। চুল যদি ঠিকঠাকমতো সাজানো যায়, তাহলে নিজেকে সবার চেয়ে আলাদাভাবে উপস্থাপন করা যায়। যাদের চুল সিল্কি তারা পেছনে লং লেয়ার করতে পারেন। সিল্কি ছোট চুলের জন্য প্রযোজ্য হেয়ার কাট হলো ফুল লেয়ার ও ইউ। এ চুলের কাটটি টিনএজ মেয়েদেরই বেশি মানাবে। ইদানীং এ ধরনের চুলের কাটগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
মডেল নিশাত
পোশাক মারজিন
ছবি আদিব আহমেদ